ইউপি নির্বাচন-মাধবপুর চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের মধ্যে নৌকার টিকেট লড়াই বিএনপির নিরব প্রচারনা
বিশেষ প্রতিনিধি:: হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচারনা। প্রার্থীরা মাঠ , ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। বিশেষ করে গত দূর্গা পুজাতে শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন ও পুজা মন্ডব পরিদর্শন ছিল চোখে পড়ার মত। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঠান্ডা লড়াই। বিএনপির প্রার্থীরা নিরব প্রচারনা চালিয়ে যাচেছন। নিবার্চনের আগেই যেন আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের নৌকার টিকেট জয় করার আরেক নির্বাচন শুরু হয়েছে। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতিকে নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করলেও প্রার্থীর প্রতি দলীয় সমর্থন থাকবে।
এবারের নির্বাচনে ধর্মঘর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ পারুল ও সাধারন সম্পাদক মেজবাউল বর পলাশ, উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি আবু তাহের , আওয়ামীলীগ নেতা নজরুল ইসলাম রাজা , এহসানুল হক ।
অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম কামাল ও সাইফুল ইসলাম টিটু।
বিগত নির্বাচনে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীর সাথে টক্কর দিয়ে অল্প ভোটে পরাজিত হয় আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ফারুক আহামেদ পারুল।
২ নং চৌমুহনী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক মোঃ আপন মিয়া, আওয়ামীলীগ নেতা আজাহার উদ্দিন ভুইয়া, মাধবপুর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আতাউস সামাদ বাবু।
অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনি সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সোহাগ ও মোহাম্মদ আলী ।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোঃ আপন মিয়া।
৩ নং বহরা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান আরিফ, সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন, সদ্য আওয়ামীলীগে যোগদানকৃত এহতাশেমুল বার চৌধুরী লিপু।
বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে শাহিন আল রিপন।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন কে বিপুল ভোটে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জয় লাভ করেন আরিফুর রহমান।
তবে এবারের নির্বাচনে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এহতাশেমুল বার চৌধুরী লিপু চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে মাঠে নেমেছেন। তিনি বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে বিদ্রহী (স্বতন্ত্র) নির্বাচন করে পরাজিত হন।
৪ নং আদাঐর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচেছ সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাজুল ইসলাম, বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফারুক পাঠান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব , আওয়ামীলীগ নেতা শেখ দুলাল
বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে সাবেক চেয়ারম্যান মীর খুর্শিদ আলম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোঃ আল আমিন ।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফারুক পাঠান , বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী মীর খুর্শিদ আলমের সাথে টক্কর দিয়ে জয় লাভ করেন।
গত নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক পাঠানের সঙ্গে মাঠে কাজ করতে দেখা গেলেও এবারের নির্বাচনে হাবিবুর রহমান হাবিব নিজেই চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন।
৫ নং আন্দিউড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুছ চকদার মাখন, মিজানুর রহমান , নেপাল দাস।
বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে উপজেলা বিএনিপর সহ সভাপতি মোঃ অলি উল্লাহ, সাবেক ছাত্রনেতা এখলাছুর রহমান সিরাজী।
তবে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাক আহামেদ খান হেলাল
বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলে ইউনিয়নে উপ-নির্বাচন হয়। এতে নেপাল দাস ও মিজানুর রহমান কে পরাজিত করে মোস্তাক আহামেদ খান হেলাল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
৬ নং শাহজাহানপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন খান, ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক লিয়াকত আলী মজনু।
অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচেছ সাবেক চেয়ারম্যান ,উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক পারভেজ হোসেন চৌধুরী ও বিএনপির নেতা আলফাজ মিয়া।
ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌফিকুল আলম চৌধুরী মারা গেলে ইউনিয়নে উপ- নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। এতে বিএনপির নেতা পারভেজ হোসেন চৌধুরী কে পরাজিত করে বাবুল খান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।
৭ নং জগদীশপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম , ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মাসুদ খান, সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন খান , জেলা তাঁতি লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরুল হোসেন রাসেল ।
বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে একলাছুজ্জামান ভুইয়া।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আজিজুর রহমান বাচ্চু কে পরাজিত করে বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শক্ত অবস্থান না থাকলেও লড়াই হবে আওয়ামীলীগের বিদ্রহী প্রাথীর সঙ্গে।
৮ নং বুল্লা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন উপজলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাধব রায় , কৃষকলীগ নেতা বশির আহামেদ, আওয়ামীলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান,ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সম্পাদক শামীম রহমান ।
বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম মামুন, সাবেক চেয়ারম্যান তাজউদ্দিন টেনু।
এই ইউনিয়নে গত নির্বাচনে মোঃ বশির মিয়া নৌকার টিকেট নিয়ে নির্বাচন করলেও বিএনিপর প্রার্থী সামসুল ইসলাম মামুনের কাছে বিশাল ভোটে পরাজিত হন।
এবারের নির্বাচনে সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অলিউর রহমানের ছেলে শামীম রহমান নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। তৃনমুল আওয়ামীলীগ কে সুসংগঠিত করতে তিনি দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে যাচ্ছেন। তাছাড়া আওয়ামীলীগের সকল ইউনিটের সঙ্গে শামীমের রয়েছে সু সম্পর্ক।
৯ নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মহিউজ্জামান হারুন, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল আউয়াল লিটন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মান্নান খোকন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল পাঠান,
বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে সৈয়দ মোঃ সোহেল ।
বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ জাবেদ এবারে প্রার্থী হবে কিনা বা কোন দলীয় ব্যানারে প্রার্থী হচ্ছেন কিনা এই বিষয়ে বার বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ আলমগীর মারা গেলে ইউনিয়ন উপ- নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। এতে সৈয়দ মোঃ জাবেদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নয়াপাড়া ইউনিয়ন টি একটি শিল্প এলাকা। তাই ইউনিয়ন টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটি ইউনিয়ন। সৈয়দ মোঃ আলমগীর দীর্ঘদিন যাবত এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এবার উনার বড় ছেলে সৈয়দ মোঃ সোহেল বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছেন। তরুন এই বিএনপির নেতা দীর্ঘদিন যাবত দলের জন্য শ্রম , ঘাম দিয়ে যাচেছন। বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্টানে উপর ভুমিকা ছিল চোখে পড়ার মত। তাছাড়া এই তরুন চেয়ারম্যান প্রার্র্থীর সঙ্গে চা শ্রমিকদেরও রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে এই তরুন নেতাকে দলীয় সমর্থন দিলে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই হবে এমনটাই মনে করছেন সাধারন জনগন।
১০ নং ছাতিয়াইন ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে আওয়ামীলীগ নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন আহামেদ , সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম মনুর স্ত্রী ফাতেমা – তুজ – জোহরা রিনা, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রোকন মিয়া।
বিএনিপর প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন বিএনপির নেতা মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী কাসেদ ।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন , খায়রুল ইসলাম মনু কে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সম্প্রতি খায়রুল ইসলাম মনু মারা গেলে তার স্ত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবার ঘোষনা দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় আওয়ামীলীগ শেষ পর্যন্ত কাকে নৌকা দেয়।
১১ নং বাঘাসুরা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে নাম শুনা যাচ্ছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য মিছবাউদ্দিন তালুকদার সোয়েব,, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক এখলাছুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা জুয়েল রানা ।
বিএনপির প্রার্থী হিসাবে শহীদ উদ্দিনের নাম শুনা যাচ্ছে।
তবে বর্তমান চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মোঃ শাহাব উদ্দিন স্বতন্ত্র নাকি কোন দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করবেন এই বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ব্যাস্ত আছেন বলে কথা বলতে রাজি হননি।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শাহাব উদ্দিন জয়লাভ করলেও এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আওয়ামীলীগ বুজে শুনে প্রার্থী দিলে আর দলীয় কর্মী এক যোগে মাঠে কাজ করলে কঠিন লড়াই হবে এই ইউনিয়নে। #