দাবি না মানলে মহাসড়কে অবস্থানের ঘোষণা চা-শ্রমিকদের

রিপোর্টার নামঃ
  • বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২
  • ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান নিউজ :: শুক্রবারের মধ্যে মজুরি বৃদ্ধির দাবি মেনে নেওয়া না হলে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত চা শ্রমিকেরা।

বৃহস্পতিবার সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা-বাগানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালী সভাপতি বিজয় হাজরা এ ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তিন দিন ধরে চট্রগ্রাম, সিলেটসহ সারা দেশের ২৩১টি চা-বাগানে দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি করছেন চা-শ্রমিকেরা।

বিজয় হাজরা বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আমরা তিন দিন ধরে সারা দেশে চা–বাগানে দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করছি। কিন্তু আমাদের কর্মবিরতিকে মালিকপক্ষ কোনো প্রকার গুরুত্বই দিচ্ছে না। কাল দুই ঘণ্টা কর্মবিরতির শেষ দিন। আপনারা প্রতিটি চা-বাগানে প্রস্তুতি নিন। যদি কালকের ভেতর কোনো আশানুরূপ সমাধান না আসে, তাহলে প্রতিটি চা-বাগানের শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে নিকটস্থ শহরের মহাসড়কে অবস্থান করুন। প্রতিটি চা-বাগানে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলুন।’

এ সময় সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি পংকজ কন্দ, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, ভাড়াউড়া বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

চা-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিজয় বলেন, ‘১৯ মাস ধরে আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি। ১৩টি সভা হয়েছে তাদের সঙ্গে। মালিকপক্ষ আমাদের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকার সঙ্গে ১৪ টাকা বাড়াতে চায়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে ১৩৪ টাকা দিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব। প্রতিটি চা-শ্রমিকের পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। আমরা মালিকপক্ষের কাছে দাবি রেখেছি আমাদের মজুরি ৩০০ টাকা করা হোক।’

এদিকে কর্মসূচির তৃতীয় দিনেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে চট্রগ্রাম, সিলেটের চা-শ্রমিকেরা সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন।

ভুরভুরিয়া চা-বাগানের নারী চা-শ্রমিক সরস্বতি পাল বলেন, ১২০ টাকার মজুরি দিয়ে ৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। কোনোদিন এর চেয়ে বেশি সময়ও কাজ করতে হয়। শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু মালিকপক্ষ মজুরি ১২০ টাকা থেকে ১৪ টাকা বাড়ানোর কথা বলেছে। সন্তানদের নিয়ে ডাল-ভাত খেয়ে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করার জন্য এই দাবি জানানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পংকজ কন্দ বলেন, ‘কয়েকটি পত্রিকায় মালিকপক্ষের বক্তব্য দেখলাম। তারা নাকি রেশন দিচ্ছে, ঘর দিচ্ছে, অনেক সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকেরা রেশনও ভালো করে পাচ্ছে না। সারা বছর শুধু লাল আটা দেওয়া হয়। একটি ঘরের কক্ষে গাদাগাদি করে শ্রমিকদের বাস করতে হয়। এখনো নিরাপদ পানি, স্যানিটেশনের অভাব রয়েছে। কাল কর্মবিরতি শেষে সারা দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তীব্র আন্দোলনের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার অনুরোধ করছি।’

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain