নিউজ ডেস্ক :: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারের আবারও সংঘাত হচ্ছে, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অত্যাচারিত লোকজনকে ওই এলাকা সরে যেতে বলা হয়েছে। ফলে ভয় হয়, অত্যাচারীরা হয়তো আমাদের দেশের দিকে আসতে শুরু করবে। তবে জানতে পারেছি- তারা অন্যদিকে যাচ্ছে। তবুও আমরা আমাদের বর্ডারে সতর্কতামূলক অবস্থা গ্রহণ করেছি। সীমান্ত দিয়ে সেদেশ থেকে আর কাউকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। মিয়ানমারের লোক আমাদের দেশে আসতে না আসতে পারে সে জন্য বিজিবিকে সতর্ক করা হয়েছে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে চা শ্রমিকদের ভার্চুয়াল মতবিনিময় উপলক্ষ্যে সিলেটের লাক্কাতুরা বাগানে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। সরকার যাথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে ফেরে এসে পড়েছে মিয়ানমারের গোলা। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা ঘটলো মিয়ানমার।
দ্বিতীয় দফায় শনিবার মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবান সীমান্তবর্তী এলাকায় পড়ার প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তিনি তাঁর সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করবেন এবং এমন দুর্ঘটনা আগামীতে যাতে না ঘটে বিষয়টি তারা দেখবেন।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গোলা বান্দরবান সীমান্তবর্তী এলাকায় পড়েছে। সেখানে দুটি গোলা অবিস্ফোরিত থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এসব গোলা এসে পড়ে।
এ বিষয়ে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে, যা নাইক্ষ্যংছড়ি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় স্থানীয়দের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, ‘আজ স্থানীয়রা সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের একটি হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করতে দেখেছে। এ সময় তারা সীমান্তের কাছে দুটি মর্টার শেল ফেলেছে।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন,‘এ বিষয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে রোববার ডেকে প্রতিবাদ করা হবে।’
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, সকালে রেজু আমতলী বিজিবি বিওপির অধীন সীমান্ত পিলার ৪০-৪১-এর মাঝামাঝি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান এবং দুটি অ্যাটাক হেলিকপ্টার আসে। ওই সময় যুদ্ধবিমান থেকে আনুমানিক ৮ থেকে ১০টি গোলা ছোড়া হয়। হেলিকপ্টার থেকেও আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫টি গোলা ছুড়তে দেখা যায়।
গত ২৮ আগস্ট দুপুরের পর পরই বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া দুটি মর্টার শেল পড়ে থাকতে দেখা যায়, তবে এতে হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল বাংলাদেশে পড়ার ঘটনায় কড়া জবাব দিয়েছে ঢাকা। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে ২৯ আগস্ট বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এনে নোট ভারবালের মাধ্যমে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, এর আগে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা।
তিনি আরও বলেন, ‘নোট ভারবালের মাধ্যমে তাকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। তাকে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।’