অনুসন্ধান নিউজ :: সরকার ঘোষিত মহাল থেকে পরিকল্পিত ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে বালু উত্তোলনে সমস্যা নেই সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুলসংলগ্ন সারি-গোয়াইন নদীর জলুরমুখ এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে রাতারগুল এখন হুমকির মুখে। আশপাশের পাঁচটি গ্রামের মানুষ কৃষিজমি ও বসতভিটা হারানোর আশঙ্কায় আছে। অথচ প্রকৃতি ও পরিবেশবিধ্বংসী এসব কর্মকাণ্ড রুখতে প্রশাসন নীরব।
৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাতারগুল খেয়াঘাট এলাকায় আয়োজিত এক নাগরিক বন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখা ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপারের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
রাতারগুল এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি আবদুল করিম শিকদারের সভাপতিত্বে নাগরিক বন্ধনে সঞ্চালনা করেন ও ধারনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী।
বক্তব্য রাখেন বাপার জাতীয় পরিষদ সদস্য ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক শাকিল, অধ্যাপক ড. আলী ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সহ–আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার সৈয়দা সীমা করিম প্রমুখ।
বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, রাতারগুলসংলগ্ন জলুরমুখ এলাকায় প্রতি রাতে বালু উত্তোলন করছে ‘বালুখেকো’ দুর্বৃত্তদের একটি চক্র। নিজেদের প্রভাবশালী দাবি করা এ চক্রের বালু উত্তোলনের ফলে রাতারগুল ভাঙনের মুখে। এ ছাড়া পাশের চালিতাবাড়ীসহ একাধিক গ্রামের মানুষ কৃষিজমি ও বসতভিটা হারানোর হুমকিতে আছেন। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন দুর্বৃত্তদের দমনে ব্যর্থ হওয়ায় পরিবেশবাদীরা এ প্রতিবাদী নাগরিক বন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক শাকিল বলেন, আমরা প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পক্ষে। তবে তা অবশ্যই পরিকল্পিত ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে হতে হবে। সরকার ঘোষিত বালু মহাল থেকে নির্দেশিত পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনে সমস্যা নেই। এসব বালু মহাল ইজারা দিয়ে সরকার রাজস্ব পায়; দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নও নিশ্চিত হয়। রাতারগুল জলাবনের নিকটে সরকার বালু মহাল ঘোষনা করেনি। অথচ প্রতি রাতেই এখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। যেহেতু দিনের বেলা বালু উত্তোলন না করে, রাতের বেলায় বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয়া যায় ব্যাপারটি আইনসিদ্ধ নয় বা অবৈধ। এতে সরকারও যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, জলাবনও হুমকির সম্মুখিত হয়ে পড়ছে।
প্রায় এক ঘণ্টা এ কর্মসূচি চলে। এতে বাপার কর্মী সুপ্রজিত তালুকদার ও বাবুল আল মামুন, গোয়াইনঘাট উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, রাতারগুল গ্রামের বাসিন্দা হারিছ মিয়া, মিনহাজ উদ্দিন, মো. সোনা মিয়া, গিয়াস উদ্দিন, ফখরুল ইসলাম, আবদুল কাদির, বিল্লাল আহমদ, কাওছার আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচি শেষে বাপা নেতৃবৃন্দ নদীভাঙনের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত রাতারগুল এলাকা পরিদর্শন করেন।