অনুসন্ধান নিউজ :: উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গ শাইখুল ইসলাম আল্লামা লুৎফুর রহমান বর্ণভী (রাহ.) প্রতিষ্ঠিত অরাজনৈতিক সংগঠন ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র উদ্যোগে সিলেটে দুদিনের ইজতেমা শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) ফজরের নামাজের পর সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পারাইরচকস্থ কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে শুরু হয় এ ইজতেমা। শুক্রবার সকাল ১০টায় আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে ‘আত্মশুদ্ধি’র এই আয়োজন শেষ হবে।
ঘরে ঘরে দ্বিনের দাওয়াত, সমাজ সংস্কার ও প্রত্যেককে সোনার মানুষে পরিণত করার মিশন নিয়ে পথচলা ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র ৭৭ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছে এ ইজতেমার।
আজ ফজরের নামাজের পর ১ম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা সাইদুর রহমান বর্ণভী। উদ্বোধনী বয়ান পেশ করেন সংগঠনের আমির মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ রশিদুর রহমান ফারুক বর্ণভী।
এরপর প্রথম অধিবেশনে ধারাবাহিকভাবে বয়ান পেশ করেন মাওলানা শামসুদ্দিন কাসেমি (জামালপুর), মাওলানা মুহাম্মদ আলী (সিরাজগঞ্জ) ও মাওলানা ইমাম হোসাইন (জামালপুর)।
কিছুক্ষণ বিরতির পর শুরু হয় দ্বিতীয় অধিবেশন। এতে ধারাবাহিকভাবে সভাপতিত্ব করেন মাও. মুহিব্বুল হক (গাছবাড়ী, মাও. মুহিউল ইসলাম বুরহান (রেঙ্গা), মাও. আব্দুল কাদির (বাঘরখালী), মাও. হুসাইন নূরী চৌধুরী (নবীগঞ্জ), মাও. মজদুদ্দিন (ভার্থখলা) ও মাও. এমদাদুল্লাহ (কাতিয়া)।
বয়ান পেশ করেন মাও. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ হাসান (বাহাদুরপুর), মাও. আব্দুল হামিদ (মধুপুরী), মাও. জিকরুল্লাহ খান (ঢাকা), মুফতি ফয়জুল্লাহ ছাহেবযাদা বেলায়াত রহ. (ঢাকা), ড. মুশতাক আহমদ (ঢাকা), মাও. সাজিদুর রহমান (বি-বাড়ীয়া), মাও. মুশতাক আহমদ (খুলনা), মাও. হামিদ জাহেরী (ঢাকা), মাও. গোলামুর রহমান (খুলনা), মাও. জালাল আহমদ (সাতক্ষীরা), মাও. উবায়দুর রহমান মাহবুব (বরিশাল), মাওলানা আনাছ সাহেব (ভোলা), মাও. আব্দুল মালিক (ভোলা), মাও. আব্দুল বাসিত খান (সিরাজগঞ্জ) ও মাও. আকরাম আলী (মাদারীপুর)।
দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এ অধিবেশন। দুপুর ১২টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত খাবার ও নামাজের বিরতি দেওয়া হয়। দুপুর দেড়টা থেকে শুরু হবে তৃতীয় অধিবেশন। রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন অধিবেশনে দেশি-বিদেশি মুরুব্বি ও প্রখ্যাত আলেম এবং দ্বিনের দাঈরা বয়ান পেশ করবেন। রাত ১০টায় প্রথম দিনের কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইজতেমায় আসা গাড়িবহর সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের বাইপাসের মুখে আটকে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। ইজতেমার আশপাশে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে যাতে বিশৃঙ্খলা বা যানজট তৈরি না হয় সেজন্য এমনটি করা হচ্ছে। বাইপাসের মুখ থেকে পায়ে মুসল্লিরা ইজতেমাস্থলে যাচ্ছেন।
দেখা যায়- সকাল থেকেই বাইপাসের মুখে গাড়ি থেকে নেমে সারিবদ্ধভাবে ইজতেমাস্থলের দিকে হেটে যান মুসল্লিরা। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্যান্ডালের ভিতর হাজার হাজার মুসল্লিতে প্রায় ভরে উঠেছে। দলে দলে মুসল্লিদের ঢল নামতে দেখা যায় ইজতেমায়।
আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, অরাজনৈতিক সংগঠন ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র এই ইজতেমায় লক্ষাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করার প্রত্যাশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি দুইদিন আগেই সম্পন্ন করা হয়েছে। ইজতেমা সফল করার লক্ষ্যে ১১টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার থেকেই উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দ ইজতেমা মাঠে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন।
ইজতেমা মাঠে এবং মাঠের চারাশে ও সড়কে আয়োজক কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন। মাঠের ডান পাশে রয়েছে পশ্রাব-পায়খান, ওজুর ব্যবস্থা। সামনের দিকে রয়েছে গোসল এবং মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। খাবার পানির জন্য সিলেট সিটি করপোরেশনের গাড়িও রয়েছে মাঠে। এছাড়াও মাঠের পাশে রয়েছে সিসিকের ‘ভ্রাম্যমাণ টয়লেট’।
অপরদিকে, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত রয়েছে মোগলাবাজার থানাপুলিশের একটি টিম।