শিরোনাম :
শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে আঞ্চলিক সড়কে ভাঙন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বিএনপির সাথে সংলাপের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ ডিবি কার্যালয়ে থাকবে না কোনো আয়না ঘর-ভাতের হোটেল : মল্লিক সিলেট জেলা দক্ষিণ জামায়াতের সদস্য শিক্ষা শিবিরে এডভোকেট জুবায়ের সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে প্রাণ গেল পুলিশের বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ সিলেট অঞ্চলের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদ গঠন শাবি ভিসি’র বাংলোর সিসিটিভি’র হার্ডডিস্ক ‘গায়েব’ হিউম্যান রাইটস’র চেয়ারম্যান দেলোয়ার খানের বিদায়ী সংবর্ধনা কবি ও লেখক বাবুল দেবের রচিত নাড়ির টান ও প্রতিদিন প্রতিক্ষণ বই দুটির প্রকাশনা উৎসব ফেঞ্চুগঞ্জে সংবর্ধনায় খান জামাল-গনহত্যায় জড়িতদের জাতী ক্ষমা করবেনা

বাস ধর্মঘট: পথে পথে দুর্ভোগে সাধারণ যাত্রীরা

রিপোর্টার নামঃ
  • শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

নুসন্ধান নিউজ :: তোয়াহিদ মিয়া। বাড়ি সুনামগঞ্জের গৌরারং ইউনিয়নের লালপুর গ্রামে। সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভোরে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। সাথে দু’জন মধ্য বয়সী মহিলা। তিনটা গাড়ি বদল করে সকাল ১০টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজারে পৌঁছান তারা। সিলেট থেকে লামাকাজি, তারপর জাউয়া বাজার, পরে পাগলা বাজার। যে গাড়িতে জাউয়া বাজার থেকে এসেছেন সেটি আর সামনে যাবে না। তাই পাগলা বাজার থেকে ধরতে হবে নতুন গাড়ি।

এদিকে তিন দফা গাড়ি পরিবর্তন করে পাগলা পর্যন্ত পৌছতে তাকে গুনতে হয়েছে পাঁচ শতাধিক টাকা। অবরোধ না থাকলে যেখানে তার সর্বোচ্চ খরচ হতো দুই থেকে তিন শত টাকা। চোখেমুখে ক্লান্তি, বিরক্তি আর ক্ষোভের ছাপ স্পষ্ট। যেনো কিছু বলতেও পারছেন না, সইতেও পারছেন না।

বয়সে তরুণ অনিক দেবনাথ। ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ থেকে তিনগাড়ি পরিবর্তন করে পৌঁছেছেন দিরাই রাস্তার মুখ মদনপুর পয়েন্টে। তার গন্তব্য দিরাই অভিমুখে সাদিরপুর পয়েন্টে। তিনিও ভাড়া গুনেছেন প্রায় তিনগুণ বেশি। সময় খুইয়েছেন দুই-তিনগুণ। ভোগান্তি তো আর আছেই। সেই সাথে আছে পরিবহণ শ্রমিকদের অসৌজন্যমূলক আচরণ আর গাড়িগুলোকে পুলিশি হয়রানির ভয়৷ তবু যেতে হবে। বাড়িতে জরুরি দরকার। এমনসব দুঃসহনীয় দুর্ভোগ কাঁধে করে ২০মিনিট ধরে চতুর্থ গাড়ির সন্ধান করছেন তিনি।

ডাবর এলাকা থেকে ১০ বছরের ছোট্ট নাতনী ফারিহার হাতে ধরে দ্রুত পূর্বদিকে হেঁটে যাচ্ছেন ষাটোর্ধ আকবর আলী মোল্লা। তারা যাবেন জাউয়া বাজার এলাকার সাদারাই গ্রামে। সুনামগঞ্জ, দিরাই, জামালগঞ্জ অর্থাৎ পশ্চিমাঞ্চলের দিকে কদাচিৎ দু’একটা সিএনজি, রিকশা-অটোরিকশা ইত্যাদি যানবাহন চললেও পূর্বদিকে কোনো ধরণের যানবাহনই যাচ্ছে না। তাই নাতনীকে নিয়ে নিরুপায় হয়ে পায়ে হেঁটেই রওয়ানা করেন তিনি।

শুধু তোয়াহিদ মিয়া, অনিক দেবনাথ কিংবা ষাটোর্ধ আকবর আলীই নন মালিকদের ডাকা আকস্মিক, অযাচিত পরিবহণ ধর্মঘটে এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে বের হওয়া সব যাত্রীরা। যাত্রীদের অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি এখন চলমান নেই যে, অবরোধ ডাকতে হবে। তাছাড়া যেসব দাবিতে পরিবহণ মালিকরা অবরোধ ডেকেছেন সেগুলো যৌক্তিক দাবি না। প্রকৃতপক্ষে তারা অন্য ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়ন করছেন। এগুলো কাম্য নয়।

শুক্রবার দিনব্যাপী শান্তিগঞ্জ উপজেলার শান্তিগঞ্জ বাজার, পাগলা বাজার, দিরাই রাস্তার মুখ (মদনপুর পয়েন্ট), ছয়হারা, আক্তাপাড়া, নোয়াখালী, পাথারিয়া ও ডাবর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ড, লেগুনা-সিএনজি স্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রী আছেন কিন্তু গন্তব্যে যাওয়ার জন্য নেই কোনো যানবাহন। যেগুলো আছে সেগুলো বন্ধ। আর ধর্মঘট উপেক্ষা করে যেসব যানবাহন চলছে, সেসব যানবাহনের চারকরা যাত্রীদের কাছে চাইছেন মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া। শুধু শান্তিগঞ্জ উপজেলাতে নয়, এভাবে চলছে সমস্ত সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কব্যাপী।

বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকারের যোগসাজশে সিলেটের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির গণসমাবেশে যাতে সাধারণ নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ না করতে পারেন সেজন্য পরিবহণ মালিকরা এ পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। এটি কাম্য নয়। মানুষ তাদের ভোগান্তির কথা ভুলবে না। এর জবাব একদিন দিবে। আর এসব করে সাধারণ মানুষকে তাদের প্রকৃত দাবি থেকে সরানো যাবে না।

পরিবহণের শ্রমিকরাও এ অবরোধ মন থেকে মেনে নেয় নি জানিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিএনজি চালক বলেন, আমাদের কি করার আছে। রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা নিরুপায়।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain