শিরোনাম :
শাবি ভিসি’র বাংলোর সিসিটিভি’র হার্ডডিস্ক ‘গায়েব’ হিউম্যান রাইটস’র চেয়ারম্যান দেলোয়ার খানের বিদায়ী সংবর্ধনা কবি ও লেখক বাবুল দেবের রচিত নাড়ির টান ও প্রতিদিন প্রতিক্ষণ বই দুটির প্রকাশনা উৎসব ফেঞ্চুগঞ্জে সংবর্ধনায় খান জামাল-গনহত্যায় জড়িতদের জাতী ক্ষমা করবেনা নজির মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষককে বিদায় সংবর্ধনা মৌলভীবাজারের হত্যা মামলার আসামী সিলেটে গ্রেফতার গোয়াইনঘাটে আরইআরএমপি প্রকল্পের চেক প্রদান  সিলেটে ৬ লাখ টাকা আত্মসাত-পুলিশের চেষ্টায় টাকা ফেরত পেয়েছেন ওই নারী সিলেট মহানগর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল সম্পন্ন সিলেটের সকল স্কুল কলেজের সামনে জেব্র ক্রসিং স্থাপনের দাবি-নিসচা সমাবেশে

সিলেটে নৃশংসভাবে রাজন হত্যা: মহাজটে আটকা বিচার!

রিপোর্টার নামঃ
  • শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৭০ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: ২০১৫ সালের ৮ জুলাই সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে শিশু সামিউল আলম রাজনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রতিবাদে বিস্ফোরিত হয়ে ওঠে গোটা দেশ। ঘটনার তীব্রতায় বাধ্য হয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সহায়তায় একে একে গ্রেফতার হয় রাজনের ঘাতকরা। নিম্ন আদালতে রাজন হত্যার বিচার শেষ হয়েছিল মাত্র ১৭ কার্যদিবসে। কিন্তু অধস্থন আদালতে বিচার দ্রুত শেষ হওয়ার গতি থমকে যায় উচ্চ আদালতে। বর্তমানে সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে মামলার মহাজটে আটকে আছে রাজন হত্যাকাণ্ডের বিচার।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর রাজন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ৪ জনের ফাঁসি, ১ জনের যাবজ্জীবন, ৩ জনের সাত বছরের কারাদন্ড, ২ জনের এক বছরের কারাদন্ড এবং ৩ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।

এর আগে ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে রাজন হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযুক্তরা হলেন- সিলেট সদর উপজেলার কুমারগাঁও শেখপাড়ার মৃত আবদুল মালিকের ছেলে কামরুল ইসলাম, তার ভাই শামীম আহমদ, দিরাইয়ের বাসিন্দা জাকির হোসেন পাভেল, কামরুলের ভাই মুহিদ আলম, আলী হায়দার, তাজ উদ্দিন আহমদ বাদল, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, দুলাল আহমদ, নগরীর জালালাবাদ থানার পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে ভিডিওচিত্র ধারণকারী নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী। হত্যার পর লাশ গুম চেষ্টার অভিযোগে আদালতের বিচারক মুহিদ আলম, ময়না চৌকিদার, তাজ উদ্দিন আহমদ বাদল ও শামীম আহমদের বিরুদ্ধে আলাদা অভিযোগ আনা হয়।

রাজন হত্যা মামলায় মোট ৩৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

নিম্ন আদালতের রায়ে কামরুল ইসলাম, ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেলকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পান নুর মিয়া। মূল হোতা কামরুলের ভাই মুহিদ আলম, শামীম আহমদ ও আলী আয়দারকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীকে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

দেশজুড়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও শেষ হয়নি বিচারকাজ।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাজন হত্যা মামলার রায় নিম্ন আদালতে মাত্র ১৭ কার্যদিবসের মধ্যে এসেছিল। তবে উচ্চ আদালত তথা হাইকোর্টে গিয়ে গতি হারায় মামলার বিচারকাজ।

অধস্থন আদালতের রায়সহ মামলার নথিপত্র ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর হাইকোর্টে জমা হয় এবং ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন।

প্রধান বিচারপতির নির্দেশে মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করা হয়। তবে এ কাজ শেষ হতে লাগে প্রায় এক বছর। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে রায় প্রদান করেন। রায়ে নিম্ন আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত নুর মিয়ার সাজা কমিয়ে ছয় মাস করা হয়। অন্য আসামিদের সাজা বহাল থাকে উচ্চ আদালতে।

আসামিদের পরিবার ও আইনজীবী সূত্র জানায়, হাইকোর্টের ওই রায় প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের মে মাসে। রায়ের পর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। তবে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আপিল বিভাগে শুনানি হয়নি।

সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুন অবধি দেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৪১ লাখ ৯৮ হাজার ৫৫৩টি। তন্মধ্যে আপিল বিভাগে ১৭ হাজার ৫৪৭টি মামলা ঝুলে আছে।

মামলার মহাজটের মধ্যে পড়ে আছে আলোচিত রাজন হত্যা মামলাটিও।

বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও রায় পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় হতাশা ঘিরে ধরছে বলে জানিয়েছেন রাজনের বাবা আজিজুর রহমান। আপিল বিভাগে দ্রুত শুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন।সূত্র::সিলেটভিউ

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain