অনুসন্ধান নিউজ :: স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চলের স্বীকৃতি পায়নি সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জ। এ স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন জকিগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে তারা সর্বমহলের সহযোগিতা কামনা করে তারা বলেন, জকিগঞ্জকে প্রথম মুক্তাঞ্চলের স্বীকৃতি না দিলে দেশে-বিদেশে আন্দোলন গড়ে তুলা হবে।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) সিলেট মহানগরীর এক অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে জকিগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ২১ নভেম্বর জকিগঞ্জ উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়েছিল। প্রশাসনিক কার্যক্রমও শুরু হয়েছিল সেদিনই। অথচ স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চলের স্বীকৃতি পায়নি এ উপজেলা। স্বীকৃতি আদায়ের জন্য জকিগঞ্জ উপজেলাবাসী দেশে-বিদেশে দীর্ঘদিন থেকে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছর ২১ নভেম্বর জকিগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী জকিগঞ্জ উপজেলাবাসীর সংগঠন ‘জকিগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকে’ গত বছরের ২০ নভেম্বর লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে র্যালি ও সমাবেশ করেছে। এতে কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন একাত্মতা ঘোষণা করে। সেদিন জকিগঞ্জেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, জকিগঞ্জবাসীর এ দাবি বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনারের মাধ্যমেও দাবি-দাওয়া পাঠানো হয়েছে। গত বছর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ খ ম মোজাম্মেল হকের সাথে সাক্ষাত করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেয়া হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে মন্ত্রনালয়ের মহাপরিচালক বৃহত্তর সিলেটের কৃতিসন্তান জহুরুল ইসলামকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে জকিগঞ্জ দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চলের সরকারি স্বীকৃতি পাবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই করে জকিগঞ্জবাসীর প্রাণের এই দাবি বাস্তবায়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
আবুল হোসেন তার বক্তব্যে জকিগঞ্জ এসোসিয়েশনের অন্যান্য কার্যক্রমের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ২০০১ সালে জকিগঞ্জ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন গঠন করা হলেও বর্তমানে নাম পরিবর্তন করে জকিগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকে রাখা হয়েছে। মহামারি করোনার সময়ে জকিগঞ্জের মানুষের জন্য ২৬ লাখ টাকার খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। গত বছরের বন্যার সময়ে কেবল জকিগঞ্জই নয়, সুনামগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সিলেট সদর উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। জকিগঞ্জে শতাধিক ঘরবাড়ি মেরামত করে দেয়া হয়েছে। এসব খাতে দুই বছরে এক কোটি টাকাও বেশি ব্যয় করা হয়েছে।
এছাড়াও স্কুল কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ও সার্টিফিকেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার, অসহায় নারীদের কর্মমুখী করতে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। সবার সহযোগিতায় এসব কার্যক্রম আরও জোরদার হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন জকিগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি শেরওয়ান চৌধুরী, সহসভাপতি আব্দুল হালিম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম নবেল, জকিগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জুনেদ আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।