নিউজ ডেস্ক :: সিলেটে প্রতিদিনই শনাক্ত হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত নতুন রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জেলায় নতুন করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ জন। এরা দুইজনই সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বশেষ তথ্য জানান সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত শঙ্কর।
তিনি জানান, বর্তমানে সিলেটে ১২ জন রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ৬ জন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ৪ জন সিলেট জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও সিলেটের গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন করে রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে সিলেটজুড়ে আতংক বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু। মহানগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যাচ্ছে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার লার্ভা, বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সিভিল সার্জন সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসের এক তারিখ থেকে শুরু করে সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) পর্যন্ত সিলেট জেলায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মোত রোগীর সংখ্যা ৯১ জন। যাদের ৫৪ জনই সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলার বাসিন্দা।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জুলাই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনের বেশ কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এর আগে নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি এলাকায় এডিসের লার্ভার সন্ধান পায় সিলেট সিটি করপোরেশন। সবশেষ গতকাল সোমবার নগরের ২৬ ওয়ার্ডে অবস্থিত রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে পাওয়া যায় এডিস মশার লার্ভা। অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে এসব লার্ভা ধ্বংস করেছে সিসিক।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ৩টি ওয়ার্ডে পৃথক ডেঙ্গু কর্নারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসাথে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ টিম করা হয়েছে। সেখানেই তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানানিয়েছেন, সিলেট বিভাগে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় গোয়াইঘাট উপজেলায়। সেই রোগীর ঢাকা ভ্রমণের রেকর্ড পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ঢাকা ভ্রমণের সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীদের ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। তাহলে এটি মোকাবিলা করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিলেটে হঠাৎ ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, ঢাকায় এখন ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সিলেটে আক্রান্ত বেশীর ভাগ রোগীই ঢাকা ফেরত।
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, বর্ষায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এখন সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। তিন সতর্ক করছেন বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বিষয়ে। ডেঙ্গুর লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।