শাহীন আহমদ :: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ৬ নং ফতেপুর ইউনিয়নের বড় নগর গ্রামে কৃষক মিঠুন দাস। তিনি গত বছর পরীক্ষামূলক রঙিন ফুলকপির চাষ করেন। তবে এবার তিনি চার বিঘা জমিতে চাষ করেছেন নতুন জাতের রঙিন ফুলকপি, তিনি সাফল্যও। শুরুটা ইউটিউব দেখে। ইউটিউবে কিছু ভিডিও দেখার পর রঙিন কপি চাষের প্রতি আগ্রহ আসে মিঠুন দে । ভারত থেকে নিয়ে আসেন বেগুনি রঙের ভেলেনটিনা ও হলুদ রঙের কেরটিনা জাতের রঙিন কপির বিজ। তারপর চার বিঘা জমিতে প্রায় কয়েক হাজারের বেশি কপি গাছ রোপণ করেন। কেরটিনা জাতের হলুদ রঙের ফুলকপি ইতোমধ্যে বাজারজাত করতে শুরু করেছেন তিনি। গত ২০ জানুয়ারি এই রঙিন ফুলকপি বাজারে নিয়ে এসেই বাজিমাত করেন মিঠুন।
রঙিন কপির প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ থাকায় দাম পাচ্ছেন ভালো। বাজারে সাধারণ কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর তার রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা প্রতিনি পিচ। তবে ভেলেনটিনা জাতের বেগুনি রঙের কপি এখনও বাজারজাতকরণের জন্য প্রস্তুত । আর দুই-এক সপ্তাহ পরে এগুলো বাজারে আসবে বলে জানান মিঠুন দে। তিনি বলেন, ‘শুরুতে কেউ বিষয়টা নিয়ে উৎসাহ দেয়নি। তবে বাম্পার ফলন আর ভালো দাম পাওয়ায় এখন সবাই খুশি। এখন আমার খেতের হলুদ আর বেগুনি রঙের বিদেশি জাতের কপি দেখতে ভিড় বাড়ছে। বাজারেও রঙিন ফুলকপির চাহিদা ও দাম বাড়ায় ভালো লাভের আশা করছি।’
চার বিঘা জমিতে ১লক্ষ ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি হয় ১লক্ষ-৫০ হাজার টাকা মতো এখন পয়ন্ত। তবে তিসি আসা করছেন আর রঙিন ফুলকপিতে চার বিঘা জমির রঙিন ফুলকপি প্রায় ৮লক্ষ লাখ টাকা মতো বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি’। তাকে দেখে এলাকার অনেকেই বিদেশি জাতের ফুলকপি আবাদের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয় ৬ নং ফতেপুর ইউপির চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন বলেন , আমি আজ নিজেই মিঠুন এর রঙিন ফুলকপির চাষ দেখতে আসছি দেখে খুব ভালো লাগছে এবং তার উদ্যোগে তিনি স্বাগত জানান। পাশাপাশি তিনি সহযোগিতার কার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তিনি আরোও বলেন সরকারী ভাবে তাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাহার্য্য করা হলে সে আরোও ভালো ফলন করতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
এ বিষয় ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার কামরুল ইসলাম বলেন আমি এই প্রথম তদখলাম দেখে আমার খুব ভালো লাগছে। আমি মেম্বার হিসাবে আমার মিঠুন কে যে ধরণে সহযোগিতা লাগবে আমি সহযোগিতা করবো।
এ বিষয় বড় নগর সমাজ কল্যান পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দিন সুলতান ও ৬ নং ফতেপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মাসুক আহমদ জানান এমন প্রতিভাব আমাদের এলাকায় কৃষক মিঠুন এর মাঝে রয়েছে আমরা জানতাম না । আমরা আমাদের এলাকাবাসী পক্ষ থেকে মিঠুনকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আরও বলেন, মজার ব্যাপার হলো রঙিন এসব ফুলকপি দেখতে প্রতিদিনই এলাকার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ আমার জমিতে ভীড় করছেন। কেউ নিচ্ছেন চাষের পরামর্শ আবার কেউ কেউ তুলছেন ছবি। তাছাড়া বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায় এসব রঙিন কপি।
এ বিষয় সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা বলেন, সবজি চাষে লাভজনক হওয়া সিলেটের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও বীজ এবং কৃষি পরামর্শ দেয়ার কথা জানিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা । তবে মিঠুন রঙিন ফুলকপি নিয়ে তিনি বলেন, আমি দেখেছি খুবভালো বাম্পার ফলন হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে সুবিধা এখনও না দিতে পারলেও আমরা তাদের সবসময় সহযোগিতা করছি।’ রঙিন কপির পুষ্টি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এ কপির গুণগত মান সাদা কপির চেয়ে বেশি।’