শিরোনাম :
মৌলভীবাজারের হত্যা মামলার আসামী সিলেটে গ্রেফতার গোয়াইনঘাটে আরইআরএমপি প্রকল্পের চেক প্রদান  সিলেটে ৬ লাখ টাকা আত্মসাত-পুলিশের চেষ্টায় টাকা ফেরত পেয়েছেন ওই নারী সিলেট মহানগর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল সম্পন্ন সিলেটের সকল স্কুল কলেজের সামনে জেব্র ক্রসিং স্থাপনের দাবি-নিসচা সমাবেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধদের নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান ব্যাটারি চালিত যানবাহনের হয়রানি-উচ্ছেদ বন্ধ করুন: সমাজতান্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট আফজল-ফয়সল এডুকেশন এন্ড ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট এর উদ্দ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি প্রদান আঞ্চলিক ইতিহাসের ছোট-বড়ো বিষয় নিয়েই জাতীয় ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়- প্রফেসর ড. এমরান জাহান সুনামগঞ্জে কিশোরকণ্ঠ মেধাবৃত্তি কার্যক্রমের উদ্বোধন

হাকালুকি হাওরে অর্ধশতাধিক পাখি শিকার, ‘ভাগ’ করে নিলেন প্রভাবশালীরা

রিপোর্টার নামঃ
  • শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৭৫ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক নিউজ :: মৌলভীবাজারের বড়লেখার হাকালুকি হাওরে বিষটোপ দিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক হাঁস পাখি শিকারের অভিযোগে পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মো. হুসেন আহমদ (২৬) নামে এক পাখি শিকারিকে আটক করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রহস্যজনক কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়ার এমন অভিযোগ উঠেছে বনবিভাগের হাকালুকি বিটের দায়িত্বে থাকা বনপ্রহরী মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে। এমনকি ওই শিকারিকে বাঁচাতে তিনি পাখি শিকারের প্রকৃত তথ্যও গোপন করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।

এদিকে অর্ধশতাধিক পাখি শিকারের পর বন প্রহরীর উপস্থিতিতেই জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাখিগুলো ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয় পরিবেশ কর্মীরা।

পাখি শিকারি মো. হুসেন আহমদ উপজেলার তালিমপুর ইউপির মুর্শীবাদকুরা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মো. হুসেন আহমদ হাকালুকি হাওরের একটি বিলে বিষটোপ দিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক হাঁস পাখি শিকার করেন। গতকাল শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে তিনি পাখিগুলো বস্তায় ভরে স্থানীয় কাননগোবাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে হাকালুকি বিটের দায়িত্বে থাকা বনপ্রহরী মোতাহার হোসেন পাখিসহ হুসেনকে আটক করেন। পরে তাকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে ‘ভবিষ্যতে এধরনের গর্হিত কাজ করবেন না’ মর্মে হুসেনে মুচলেকা প্রদান করেন। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, শিকারিকে ছেড়ে দেওয়ার পর হাঁস পাখিগুলো বন প্রহরীর উপস্থিতিতেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা ‘ভাগবাটোয়ারা’ করে নিয়েছেন।

তবে পাখি শিকারি হুসেনের কাছ থেকে আদায় করা লিখিত মুচলেকায় উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার সকালে মো. হুসেন আহমদ নিজের জমিতে ধান রোপন করতে গেলে তিনি তিনটি মরা হাঁস পাখি পড়ে থাকতে দেখেন এবং তা বস্তায় ভরে স্থানীয় বাজারে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে বনবিভাগের হাকালুকি বিটের বিট কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন তাকে আটক করেন। পরে হুসেনের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, শিকারিকে বাঁচাতে হাঁস পাখি শিকারের প্রকৃত তথ্য গোপন করেছেন বনবিভাগের হাকালুকি বিটের দায়িত্বে থাকা বনপ্রহরী মোতাহার হোসেন। এর পেছনেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, বনপ্রহরী মোতাহার হোসেন প্রায়ই পাখি শিকারে জড়িত কাউকে ধরলে উৎকোচ নিয়ে ছেড়ে দেন।

বনবিভাগের হাকালুকি বিটের দায়িত্বে থাকা বনপ্রহরী মোতাহার হোসেন শনিবার রাতে বলেন, ‘হুসেন নিজের জমিতে ধান রোপনের সময় তিনটি মরা হাঁস পাখি পান। এগুলো তিনি বাজারে নিয়ে এলে আমি তাকে আটক করি। পরে তাকে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি ‘ভবিষ্যতে এধরনের গর্হিত কাজ করবেন না’ বলে তাদের সামনে মুচলেকা দেওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তিনটা পাখি পানিতে ফেলা হয়েছে। তবে পাখি শিকারিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া এবং তার উপস্থিতিতে ভাগবাটোয়ারার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করছেন।’

স্থানীয় পরিবেশ কর্মী সাঈব আহমদ ইয়াছের বলেন, পাখিগুলো জমিতে মরা থাকলে হুসেন আহমদ পাখিগুলো বাজারে নিয়ে আসবেন কেন? আর তিনটি পাখি বস্তায় ভরে আনতে হবে কেন? পাখিগুলো মরা হলে হুসেনকে মুচলেকা দিতে হবে কেন? তাতে প্রমাণ হয় হুসেন পাখি শিকার করে বিক্রির জন্য বস্তায় ভরে তা বাজারে নিয়ে এসেছেন।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় হাওরে বিভিন্নভাবে পাখি শিকার করা হচ্ছে। কখনও পাখি শিকারিরা ধরা পড়লে তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এই কাজটা জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরাই করছেন। যেখানে প্রাণপ্রকৃতি রক্ষায় তারা কাজ করবেন। সেখানে তারা শিকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে ছেড়ে দিচ্ছেন। এতে করে শিকারিরা সাহস পাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কখনও পাখি শিকার বন্ধ হবে না।

এ ব্যাপারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) রেজাউল করিম চৌধুরী শনিবার রাতে বলেন, ‘হাকালুকি হাওরে পাখি শিকারের বিষয়টি আমি শুনে খোঁজ নিয়েছিলাম। সেখানকার দায়িত্বে থাকা বনপ্রহরী আমাকে বলেছেন মরা তিনটি হাঁস পাখি নাকি পাওয়া গেছে। যিনি পেয়েছেন তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তিনি আবার খোঁজ নিয়ে দেখবেন।’

 

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain