নিউজ ডেস্ক :: গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে হালকা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ‘লাইট রেসকিউ অ্যাকটিভিটি’ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বুধবার (৮ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস অ্যান্ড মেইনটেইন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা লাইট রেসকিউ অভিযান করছি। ডেড বডি শনাক্ত করার জন্য ডগ স্কোয়াড আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী, সিটি করপোরেশন, রাজউকের ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে একটি কমিটি হয়েছে। বিল্ডিংটা ঝুঁকিপূর্ণ; এটাকে সাপোর্ট দিতে হবে। তারপর হেভি রেসকিউ একটিভিটিজ চালানো হবে।
ফায়ার সার্ভিসের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, হাতে বহন করার মতো যন্ত্রপাতি দিয়ে আমরা রেসকিউ অভিযান করছি। ডেড বডি বা ভেতরে আটকে পড়াদের শনাক্ত করে সে অনুযায়ী ছোট ছোট গর্ত করে তাদের বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাব জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে তাদের ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে সিদ্দিক বাজারে একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। ইতোমধ্যে আহত অবস্থায় শতাধিক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
বিস্ফোরণে নিহতরা হলেন মো. সুমন (২১), ইসহাক মৃধা (৩৫), মুনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকুতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস (৬০), নুরুল ইসলাম ভূইয়া (৫৫), হৃদয় (২০), সম্রাট (১৮) ও সিয়াম (১৮)। এ ছাড়া বিস্ফোরণে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। ওই তিনজন হলেন মো. মেহেদী হাসান, ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া সেলিম ও রবিন হোসেন।
পাঁচতলা ওই ভবনের নিচতলায় স্যানিটারি দোকান, দ্বিতীয় তলায় ব্র্যাক ব্যাংকের অফিস এবং তিন ও চারতলায় আবাসিক ভবন। এ ছাড়া ওই ভবনের পাশের আরেকটি সাততলা ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাততলা ভবনের ৪, ৫, ৬ ও ৭ তলা আবাসিক ভবন। এই সাততলা ভবনেও বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হয়।
এর আগে, রাতেই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানিয়েছিলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। আর্থিক সহায়তা, চিকিৎসা সহায়তা ও খাদ্য সহায়তা থেকে শুরু করে স্বজনদেরও সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে।
তিনি জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে সিদ্দিক বাজার বিস্ফোরণে জেলা প্রশাসনের সহায়তা বুথ বসানো হয়েছে। এ বুথ থেকে নিহতদের তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা, গুরুতর আহতদের ২৫ হাজার, সামান্য আহতদের ১৫ হাজার আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আমাদের টিম কাজ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োজন বুথ থাকবে।