আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপালে শক্তিশালী দু’টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) গভীর রাতে নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে দুই দফায় ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে জোড়া ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৮ এবং ৫.৯।
অবশ্য ভূমিকম্পের জেরে এখনও কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল সেন্টার বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম নেপালে ভূমিকম্পের দু’টি ঘটনা রেকর্ড করেছে। তবে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় সুরখেত জেলার সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের মতে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ৪.৮ এবং ৫.৯ মাত্রার দু’টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে ঘটা জোড়া এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বাজুরার ডাহাকোটে।
নেপালের সুরখেত জেলার সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের কর্মকর্তা রাজেশ শর্মা বার্তাসংস্থা এএনআই-কে ফোনে বলেন, ‘প্রথম ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় রাত ১১:৫৮ মিনিটে হয় এবং রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪.৯। এর দেড় ঘণ্টা পর রাত ১:৩০ মিনিটে (স্থানীয় সময়) ৫.৯ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়।’
বাজুরা জেলা পুলিশ কার্যালয় জানিয়েছে, রাতের আঁধারে হওয়া এই ভূমিকম্পের জেরে আতঙ্কে স্থানীয়রা ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এছাড়া বাজুরার পার্শ্ববর্তী পশ্চিম নেপালের অন্য জেলাগুলোতে কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পের প্রভাব নিরূপণ করা হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেছে বাজুরা জেলা পুলিশ কার্যালয়।
সংবাদমাধ্যম বলছে, নেপালের পশ্চিম অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল থাকলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেখানে ভূমিকম্প রেকর্ড করা হচ্ছে। এর আগে ওই এলাকায় ভূমিকম্পে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছিল। নেপালের পার্বত্য জেলা বাজুরা দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ৮৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
উল্লেখ্য, নেপালে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানী কাঠমান্ডু এবং পোখারা শহরের মধ্যবর্তী স্থানে রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে দেশটিতে অন্তত ৮ হাজার ৯৬৪ জন নিহত এবং প্রায় ২২ হাজার মানুষ আহত হন।
‘গোর্খা ভূমিকম্প’ নামে পরিচিত সেই ভূমিকম্পের আঘাতে উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি শহরও কেঁপে উঠেছিল। এর পাশাপাশি কম্পন অনুভূত হয়েছিল পাকিস্তানের লাহোরে, তিব্বতের লাসা এবং বাংলাদেশের ঢাকাতেও। সেই ভূমিকম্পের পর কাঠমান্ডু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এছাড়া ওই ভূমিকম্পে মাউন্ট এভারেস্টে তুষারপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ২২ জনের মৃত্যু হয়। পরে একই বছরের ১২ মে বড় ধরনের আফটারশক অনুভূত হয়। এই আফটারশকের কেন্দ্রস্থল ছিল কাঠমান্ডু এবং মাউন্ট এভারেস্টের মধ্যবর্তী চীন সীমান্তের কাছের অঞ্চল। এতে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যান এবং আহত হন ২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি।