শিরোনাম :
সিলেট মহানগর দক্ষিণ সুরমা থানা জামায়াতের কর্মী সমাবেশ বিজিবি’র অভিযানে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ শহীদদের রক্তের শপথ নিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদের দোসরমুক্ত করতে হবে : এড. এমরান চৌধুরী পূর্বাশা শপিং সেন্টারের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে বিএনপি নেতা আকতার রশীদ চৌধুরীকে সংবর্ধনা সিলেটে নারীর কাছে মিললো বিদেশি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ টাকা বৃহত্তর জৈন্তিয়া কল্যাণ পরিষদের আহবায়ক কমিটির সভা সিলেট মহানগর শ্রমিক কল্যাণের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলণের প্রস্তুতি সভা সিলেটে জমিয়তের গণসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে মহানগর জমিয়তের প্রচার মিছিল সিলেট সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ১কোটি ২১ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ সেনাবাহিনী যেতেই পালালেন রিকশাচালকরা, ধাওয়া দিলেন পথচারীরাও

উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণায় নাখোশ আ.লীগ, ইসির প্রশংসায় আইন বিশেষজ্ঞরা

রিপোর্টার নামঃ
  • বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ আসনের (ফুলছড়ি-সাঘাটা) উপ-নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগ নেতারা এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। তারা বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠুই হচ্ছিল, ইসি হঠকারিতা দেখিয়েছে। তবে, নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, যথাযথ কারণ দেখিয়ে নির্বাচন বন্ধ বা স্থগিত রাখার একমাত্র ক্ষমতা ইসির। তারা আইনের মধ্যে থেকে সঠিক কাজটিই করেছে।

নির্বাচন বন্ধ ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রেই নৈরাজ্য হয়নি। ঢাকায় নির্বাচন ভবনে বসে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এতগুলো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইসি কীভাবে নিল তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।

 

যথোপযুক্ত কারণ থাকলে অবশ্যই যেকোনো নির্বাচন বন্ধ বা স্থগিত ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষমতা সংবিধান তাদেরকে দিয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইসিকে আবার নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

ইসির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপনও। বুধবার বিকেলে সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে সব প্রার্থী তাদের প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, কোনো সংঘর্ষ-সংঘাত হয়নি। অথচ বাস্তবসম্মত বা কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে। যা সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তারপরও আমরা নির্বাচন কমিশনের এক তরফা সিদ্ধান্ত মেনে চলি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে দুপুরে নির্বাচন কমিশন পুরো নির্বাচন স্থগিত করে, যা সাধারণ জনগণ ও ভোটারদের হতবাক করেছে। আমি নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

অবশ্য দেশর আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে রায় দিচ্ছেন।

সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এমকে রহমান এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাংবিধানিকভাবে ইসির দায়িত্ব সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করা। গাইবান্ধার নির্বাচনে ইসি প্রভাব বিস্তার করতে দেখেছে। নির্বাচনে অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেছে। এ কারণে বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা সবসময় ইসিকে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে বলি। আজ ইসি সেটা করেছে। এটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, যথোপযুক্ত কারণ থাকলে অবশ্যই যেকোনো নির্বাচন বন্ধ বা স্থগিত ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষমতা সংবিধান তাদেরকে দিয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইসিকে আবার নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

ঢাকায় নির্বাচন ভবনে বসে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এতগুলো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইসি কীভাবে নিল তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ
জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ-এর ৯২ ক অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের যেকোনো সংসদীয় আসনের নির্বাচন বন্ধ বা স্থগিত করার ক্ষমতা রয়েছে। আমি মনে করি, আইন অনুযায়ী দুপুরের দিকেই তারা ভোট বন্ধ করেছে। ভোটগ্রহণ শেষ হলে নির্বাচন কমিশন এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারত না।

নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করায় ইসির প্রশংসা করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচনে যেকোনো অনিয়ম বা কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা ইসির রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে না। আজ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। কারণ ভোটে অনিয়ম তারা প্রত্যক্ষ করেছে। বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট নির্বাচন সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে বা রায়ে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, কারচুপি হলে নির্বাচন বন্ধ করার একমাত্র ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের। আমি মনে করি সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা এই উপ-নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।

গাইবান্ধার নির্বাচনে ইসি প্রভাব বিস্তার করতে দেখেছে। নির্বাচনে অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেছে। এ কারণে বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা সবসময় ইসিকে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে বলি। আজ ইসি সেটা করেছে। এটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য।

উল্লেখ্য, অনিয়মের অভিযোগে বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

 

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain