অনুসন্ধান নিউজ :: বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইন বলেছেন, যাদের আত্মত্যাগে ব্রিটিশ উপনিবেশের কবল থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি, পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, আমাদের অগ্রযাত্রায় যেসব মহান বিপ্লবীর চিন্তাদর্শন যোগ করা একান্ত জরুরি, সেই সাথে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে তৈরি ইতিহাসে মজলুম বিপ্লবীদের ইতিহাস। নয়তো আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের প্রগতিশীল ভবিষ্যৎ গড়তে পারব না।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সিলেট নজরুল অডিটোরিয়ামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিলেট বিভাগের আলহাজ্ব মাওলানা মঈনুল হক চৌধুরী।
মাওলানা ইসমাইল হোসাইন বলেন, ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে উপমহাদেশের আলেমদের গৌরবজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় এখনও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থির উন্নয়নে আলেমদের ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ বাংলাদেশ আজ যখন দেশ উন্নয়নের মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন এই অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার জন্য দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করছে। মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিদেশে উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। কেউ যাতে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে আমাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৩ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামো খাতে বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধন করেছে। ২০২১ সাল ছিল উন্নয়ন অভিযাত্রার অভূতপূর্ব স্বীকৃতির বছর। গত বছর উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত যোগ্যতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষে এই অর্জন বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের। মাওলানা ইসমাইল হোসাইন আরও বলেন, গত কয়েকমাস আগে কুমিল্লার পূজামণ্ডপে বিএনপি ও জামায়াতের হস্তক্ষেপে পবিত্র কোরআনকে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য পবিত্র কোরআনে কারিম রাখা হয়েছিল।
তিনি বলেন, কুমিল্লা কান্দিরপাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন মূর্তির পায়ের উপরে রেখে হিন্দু মুসলমানদের ভিতর একটি সহিংসতার ঘটনা ঘটাবার জন্য বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন সরাসরি চেষ্টা করেছিল। যেই মুহুর্তে এ ঘটনা করা হয়েছিল সেই মুহূর্তে হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় পূজা ছিল। বিএনপি ষড়যন্ত্র এমনভাবে করেছিল যেন সারা বাংলাদেশ যাতে হিন্দু ও মুসলমানদের ভিতর মারামারি হয় এবং যাতে করে হিন্দুদের পূজা মন্ডপ মুসলমানরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভেঙ্গে চুরে চুরমার করে এবং বিদেশি প্রভুদের কাছে আমাদের বাংলাদেশকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য পায়তারা করেছিল। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে বাংলাদেশের ভিতরে কোন ধরনের অস্থিরতা ও ভয়াবহ রক্তপাত দেশের ভিতরে বিশৃঙ্খলা মহান আল্লাহর রহমতে কিছুই হয় নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্যতা ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে দেশের ভিতরে কোন ধরনের হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে মুসলমানের সাথে দাঙ্গা-হাঙ্গামা থেকে দেশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। আমরাও সেদিন বলেছিলাম কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে পূজা মন্ডপ এ কোরআনে কারিম ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাখা হয়েছিল তবে আমরা মনে করি ক্ষমতার লোভে কেহ যদি পবিত্র কোরআনে কারিম কে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যেতে চায় সেটা কোনদিনও সফল হবে না এই দুনিয়ার ভিতরে পবিত্র কোরআনে কারিম কে অবমাননা করে ক্ষমতায় কেউ যেতে পারবেনা ইনশাআল্লাহ। আমরা মনে করি যাহারা এই পবিত্র কোরআনে কারিম কে পূজামণ্ডপে রেখে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করেছিল তাদেরও বিচার বাংলার জমিনে হওয়া খুবই জরুরী এবং বাংলার মানুষ জানতে চাই তারা এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত আমাদের দেশের সকল ধর্মের মানুষ সকল সকলের সাথী একটি হৃদয় সম্পর্ক কিন্তু হিন্দু মুসলমান খ্রিস্টান ১৯৭১ সালে সকল ধর্মীয় লোক ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বহু শহীদের রক্তের বিনিময়ে লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এই বাংলাদেশ আগামী দিন ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সভায় অক্ষ বদ্ধ ভাবে দেশ উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে হবে। সবাই ভেদাভেদ ভুলে আসুন আমরা সকলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করি মসজিদের ইমাম সাহেব রা এবং সকল ধর্মগুরুরা দেশে যাতে করে শান্তি ফিরে আসে আমাদের সন্তানরা আগামী দিনে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে উপহার দিতে পারি এই চেষ্টা আমাদের সকলের থাকবে এটাই হলো আজকের এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য।
আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা মইনুল হক চৌধুরী, মাওলানা সুফিয়ান বিন এনাম, মাওলানা হারুন-অর-রশিদ মিরন, কবি মিম সুফিয়ান, মাওলানা বদরুজ্জামান, মাওলানা সাইফুল্লাহ সাদি, মাওলানা মুস্তাক আহমেদ খান খতিব কেন্দ্রীয় বন্দর বাজার জামে মসজিদ। প্রিন্সিপাল মাওলানা মুখলিসুর রহমান রাজাগঞ্জী, প্রিন্সিপাল মাওলানা আহমেদ কবির, মাওলানা মোঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদ আন্তর্জাতিক হাফেজ কারী মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা মো: তোজাম্মেল হোসেন, মাওলানা মো: জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।