অনুসন্ধান নিউজ :: সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদারকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রোববারের ঘটনা খতিয়ে দেখতে এই কমিটি করা হয়েছে। দ্রুত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। কর্তৃপক্ষ আজ দুপুর ১২টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দিলেও অসংখ্য শিক্ষার্থী তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করে বিক্ষোভ করছেন।
জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্টের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগবিতন্ডা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলেন। এ নিয়ে শনিবারও আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। ওইদিন শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ ওঠে। হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিসহ তিন দফা দাবি এবং ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গতকাল রোববার ফের উত্তাল হয়ে ওঠে শাবি ক্যাম্পাস।
গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ নিজের কার্যালয় থেকে বাসভবনে যাওয়ার পথে আন্দোলনকারীরা উপাচার্যকে ঘিরে ধরে। পরে উপাচার্য এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে তালা লাগিয়ে দেন। বিকাল ৪টার দিকে শতাধিক পুলিশ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ‘পুলিশ তুমি বাসায় যাও, আমার ক্যাম্পাস ছেড়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকেন। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার করতে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। এসময় শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে পৌঁছে দেয়। পুলিশি হামলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, হামলায় তাদের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন।
এদিকে, অবরুদ্ধ পরিস্থিতি মুক্ত হয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সভা শেষে উপাচার্য সাংবাদিকদের জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাবি বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট পদ থেকে সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করেছেন। এ পদে অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।