নিউজ ডেস্ক :: ঈদের আনন্দ স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। অন্য যানবাহনের সঙ্গে ট্রেনেও গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছে নগরবাসী।
বুধবার সকালে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে ঈদযাত্রার ট্রেন। এবার ভিড় অন্য ঈদের মতোই। সঙ্গে রয়েছে ট্রেনের সিডিউল বিড়ম্বনার বিষয়টিও।
এবারের ঈদ যাত্রায় প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেনে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রা করবেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র আন্তঃনগর ট্রেনে আসন থাকবে ২৭ হাজারের বেশি।
এদিকে ঈদ যাত্রার শুরুতেই তিনটি ট্রেন বিলম্বে কমলাপুর স্টেশন ছেড়েছে। এসব ট্রেনের মধ্য সবচেয়ে বেশি দেরিতে ছাড়ে রংপুর এক্সপ্রেস ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস। বিলম্বে ট্রেন ছাড়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে যাত্রীদের মাঝে। এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) কমলাপুর স্টেশন এলাকা ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
এদিন ভোর ৬টায় রাজশাহীগামী আন্তঃনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ঈদ যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ধূমকেতুর বিলম্ব হওয়ায় ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ঈদ যাত্রা শুরু হয়।
ঈদ যাত্রার প্রথম দিনের শুরুর ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস ৫৫ মিনিট বিলম্বে স্টেশন ছাড়ে। অর্থাৎ ভোর ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা কমলাপুর ছেড়ে যায় ৬টা ৫৫ মিনিটে। অপর ট্রেন খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়ে যায় ৮টা ৪৭ মিনিটে।
রংপুর অভিমুখী রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কমলাপুর স্টেশন ছাড়ার কথা ছিল। তবে রংপুর এক্সপ্রেস ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট বিলম্ব করে কমলাপুর স্টেশন ছাড়ে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে।
এদিকে শুরুতেই শিডিউল বিপর্যয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।
এ নিয়ে কথা হয় রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মকরত দেলোয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার পরিকল্পনা করে আগেই অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি। আমার কাছে এক ঘণ্টাও অনেক দামি, কেননা ঈদের পরদিনই আমাকে ফিরতে হবে। এজন্য অনেক কষ্ট করে দুটি টিকিটের ব্যবস্থা করেছি। এখন দেখি ট্রেন ছাড়তে এক ঘণ্টার বেশি দেরি। এটা কেমন সেবা যে যাত্রার শুরুতেই দেরি, বাকি দিনগুলোতে তাহলে কী হবে? এভাবে চলতে থাকলে ভয়াবহ ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
একই ট্রেনের আরেক যাত্রী নাজমুন নাহার বলেন, ট্রেন প্লাটফর্মে আসার পর একটু দেরি হলেও মানা যায়। ট্রেনের মধ্যেই জরুরি কাজ শেষ করা যায়। কিন্তু ট্রেনই যদি না আসে তাহলে জরুরি কাজের জন্য স্টেশনের বাইরে যেতে হয়, এটা বাড়তি ভোগান্তি।
ধূমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রী জয়নাল আবেদিন বলেন, কোনো ট্রেন এক মিনিট বিলম্ব হলে আপ-ডাউনে ১৫ থেকে ২০ মিনিট বিলম্ব হয়। ধূমকেতু শুরুতেই ৫৫ মিনিটের বিলম্ব, বাকিটা সময় কীভাবে শিডিউল ঠিক হবে জানি না।
মিতু আক্তার নামে অপর একজন বলেন, ধূমকেতু ছাড়ার কথা ৬টায়, সেখানে বলা হলো সাড়ে ৬টা। এখন ৬টা ৫০ মিনিট হলো অথচ ট্রেন ছাড়ছে না। সড়কের ভোগান্তি এড়াতে আমরা ট্রেনের ওপর ভরসা করি, রাত-দিন অপেক্ষা করে টিকিট সংগ্রহ করেছি অথচ এখনো ট্রেন ছাড়ছে দেরিতে।
তবে দিনের অন্যান্য ট্রেন চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম অভিমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জগামী এগার সিন্ধুর প্রভাতি, দেওয়ানগঞ্জ অভিমুখী তিস্তা এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতি যথাসময়ে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে।
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৩ এপ্রিল ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করলেও ৩ মে ঈদ ধরে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় ২৩ এপ্রিল থেকে।
ঈদের পর ৫ মে যারা ঢাকায় ফিরবেন, তাদের জন্য ১ মে, ৬ মের জন্য ২ মে, ৭ মের জন্য ৩ মে এবং ৮ মের জন্য ৪ মে টিকিট বিক্রি করা হবে ।