রফিক সরকার গোয়াইনঘাট সংবাদদাতা :: কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সর্বত্রই বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে বন্যার পানি।
গতকাল সকাল থেকে উপজেলা প্রতিটি নদ-নদী ও হাওর অঞ্চলে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ভারতের মেঘালয় এলাকায় বৃষ্টি পরিমান অতিমাত্রায় হওয়াতে সীমান্তবর্তী উপজেলায় প্রতিটি এলাকায় বোরো ধানী জমি, শাকসবজি জমি সহ রাস্তাঘাট বন্যার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভারতের মেঘালয় ও ডাউকি এলাকার পাহাড়ি ঢলে উপজেলার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের আসামপাড়া, আসামপাড়া হাওর, সানকিভাঙা,কৈকান্দির পার, মুসলিম নগর, ১১নং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের বাউরবাগ হাওর, নন্দিরগাঁও, তোয়াক্কুল, ফতেপুর, পশ্চিম আলীরগাঁও, পূর্ব আলীরগাঁও, রুস্তম পুর ও লেঙ্গুড়া এলাকার রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। জানা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার হাওরঞ্চল সহ সিংহভাগ এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া স্কিম, বোরো ২৮-২৯ রোপা আউশ সহ শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া অবিরাম বৃষ্টিতে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান বিপর্যয় দেখা দিয়েছে চরম আকারে। তবে পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টি অব্যাহত থাকলে হাওরাঞ্চলের মানুষজনের পরিবার পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে বেকায়দায় পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারতের মেঘালয়ে অতিমাত্রায় বৃষ্টি হওয়ার কারনে সীমান্তবর্তী দুইটি উপজেলা গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর এলাকার জনসাধারণ রয়েছে বন্যার আতঙ্কে। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই বিপদ সীমান উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও সীমান্ত এলাকায় অতিমাত্রায় বৃষ্টি কারনে, দুই উপজেলাধীন ছোট বড় কয়েকটি বেড়িবাঁধ, অর্ধশত ব্রিজ ও কালবার্ড রয়েছে হুমকির মুখে।
বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্কিম, আউশ ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে । এছাড়া এসব ইউনিয়নের হাওরাঞ্চলের প্রায় ৯৫% শতাংশ ফসল ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার বন্যার পরিস্থিতি বিষয়ে আলাপ কালে গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রায়হান পারভেজ রনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় পরিদর্শন ও ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে বন্যা পরিস্থিতির সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিচ্ছি। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ধান ও শাকসবজির ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে ধারণতি করেন তিনি।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, কয়েক দিন ধরে অতি মাত্রায় বৃষ্টির ও উজান থেকে নেমে আশা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এবং আমরা সার্বক্ষণিক বন্যাকবলিত এলাকার খোঁজখবর নিয়ে মনিটরিং করছি। এবং বন্যায় জনগণের দুর্ভোগ লাগবে জন্য কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।