জৈন্তাপুরে দ্বিতীয় দফায় বন্যা, বাড়ছে টিলা ধস

রিপোর্টার নামঃ
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২
  • ১৩৬ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: টানা বৃষ্টি ও ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে সারী ও করিচ নদীর পানি বেড়েছে। নদীর পানি উপচে জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। হু হু করে পানি বাড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন মানুষ।

পানি ডুকে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অপর দিকে অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার চরিকাটা, ফতেপুর ও চিকনাগুল ইউনিয়নে বাড়ছে টিলা ধসও। বুধবার সকালে উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের বাউরভাগ দক্ষিন এলাকায় টিলা ধসে দুইজন আহত হয়েছে। ধস বাড়লেও বন্ধ হচ্ছে না টিলা কর্তন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্যা কবলিত এলাকা উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের মেঘলী, বন্দরহাটি, লামাপাড়া, ময়নাহাটি, জাঙ্গালহাটি, মজুমদার পাড়া, হর্নি, বাইরাখেল, তিলকৈপাড়া, বড়খেল, ফুলবাড়ী, ডিবিরহাওর, ঘিলাতৈল, হেলিরাই। জৈন্তাপুর ইউনিয়নের মুক্তাপুর, বিরাইমারা, বিরাইমারা হাওর, লামনীগ্রাম, কাটাখাল, খারুবিল, চাতলারপাড়, ডুলটিরপাড়, ১ নম্বর লক্ষীপুর, ২ নম্বর লক্ষীপুর, আমবাড়ী, ঝিঙ্গাবাড়ী, নলজুরী হাওর। ৩ নম্বর চারিকাটা ইউনিয়নের বালিদাঁড়া, লালাখাল, রামপ্রসাদ, থুবাং, বাউরভাগ উত্তর, বাউরভাগ দক্ষিণ, পুঞ্জী ৫ নম্বর ফতেপুর ইউনিয়নের হেমু ভাটপাড়া, মাঝপাড়া, দত্তপাড়া, বালিপাড়া, নয়াগ্রাম, নয়াগ্রাম দক্ষিন, ভেলোপাড়া, ৬ নম্বর চিকনাগুল ইউনিয়নের কান্দী ৪ নম্বর দরবস্ত ইউনিয়নের মহাইল, মুটগুঞ্জা, সেনগ্রাম, গর্দনা, ফরফরা, শুকইনপুর, রনিফৌদ, সাতারখাইসহ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বুধবার (১৫ জুন) সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত সারী নদীর পানি বিপৎসীমার ০.৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট।

সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাযায, ‘আগামী ১০ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিলেটে প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এরমধ্যে ১৭-১৯ জুন ভারী বর্ষণ হতে পারে। বাকি দিনগুলোতে থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং ২৩ জুন পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে।

হেমু ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস উদ্দিন বলেন, তাদের এলাকা সহ আশপাশের আরও কয়েকটি এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের ঘর বাড়িতে পানি। এতে রান্না-বান্না সহ নানা সমস্যায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা। গরু-ছাগল সহ গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে ও রয়েছে তারা মহাবিপদে।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম বলেন, ‘এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় বন্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যাকবলিত এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। জেলা থেকে ২৪ মেট্রিকটন চল পেয়েছি সে গুলো ইউপি চেয়ারম্যানদের নিকট হস্থান্তর করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে উপজেলায় পাহাড় ধসের সংখ্যা ও বেড়েছে তাই পাহাড় ঘেসে থাকা মানুষকে নির্দষ্ট স্থনে যাওয়ার অনুরোধ করছি।

বুধবার (১১ মে) থেকে উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়। এর মধ্যে গত ২০ ও ২৫ মে পানি কমতে শুরু করে। বন্যা পরিস্থিতিরও কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু পুরোপুরি উন্নতি হওয়ার আগে আবার এসব অঞ্চল ফের বন্যার কবলে পড়ছে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে দ্বিগুণ।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain