সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জে বন্যায় সীমাহীন দুর্ভোগ

রিপোর্টার নামঃ
  • মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২
  • ১২৩ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান নিউজ :: দিন যাচ্ছে,সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবন-যাপন করছে।

এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে কুশিয়ারা নদী ও হাকালুকি হাওর তীরবর্তী মানুষজন। ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মানুষ পানিবন্দী জীবন-যাপন করায় দেখা দিয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্যের সংকট। দীর্ঘ সময় পানিতে অবস্থান করায় হাতে-পায়ে ঘাসহ অনেনেই আক্রান্ত হচ্ছেন পানিবাহিত নানা রোগে।

সরেজিমনে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের বন্যার্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রায় পাঁচ বাড়ি-ঘরের অর্ধেক পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে আছে। এর মধ্যে অনেকে বাড়ি ঘর ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়ি ও উঁচু স্থানে গেলেও নৌকায় ও ঘরের ভেতরে উঁচু করে মাচায় পরিবার পরিজন নিয়ে বনবাস করছে। আবার অনেকে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

পানিবন্দী মানুষেরা নৌকা দেখে ত্রাণের আশায় ছুটে আশা মানুষজন জানান, প্রায় ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মানুষজন পানিবন্দী হয়ে কষ্টে দিনযাপন করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ পরিবার সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তা পায়নি। হাতে কাজ না থাকায় খাদ্য সংকটে পড়েছেন এসব শ্রমজীবী মানুষেরা।

পিঠাইটিকর গ্রামের দরছ আলী বলেন, যারা নৌকা যোগে ত্রাণ বিতরণ করেন, তারা নদী তীরবর্তী ঘরে দিয়ে যান। নদীর তীরের অনেকে একাধিক ত্রাণ পেয়ে থাকেন। গ্রামের ভিতরের অনেকে পানিবন্দী। কোনো ত্রাণ সহায়তা সেখানে পৌঁছে না।

ছত্তিশ গ্রামের বন্যা কবলিত সুফিয়া বেগম জানান, এবারের বন্যার পানিতে তার ঘরের অর্ধেক পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়ির পাশে নৌকা আসতে দেখে শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে একবুক পানি মাড়িয়ে নৌকার কাছে ছুটে এসেছেন তিনি।

গয়াসী গ্রামে মালিন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত প্রায় ১০ দিনের বেশি সময় ধরে ঘরে বুকসমান পানি। ঘরে মাচা উঁচু করে সেখানে রাত কাটান, আর দিনে নৌকা অথবা বুক পানিতে থাকতে হয়। এ অবস্থায় ঠিকমতো রান্নাও করতে পারছেন না। তিন সন্তানসহ পাঁচজনের পরিবার চলছে খেয়ে না খেয়ে।

উত্তর ইসলামপুর গ্রামের মাজিয়া বেগম বলেন, অনেক ঘরে হাঁটু সমান পানি। আমাদের গ্রামে কোনো অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র নেই। সেজন্য বাধ্য হয়ে ঘরে থাকতে হচ্ছে। পানির কারণে রান্না করা যাচ্ছে না। অনেকে রান্না করা খাবার বিতরণ করেন, সেই খাবার পেয়ে খেয়ে বেঁচে আছি।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গ্রামে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন, প্রবাসী ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

 

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain