অনুসন্ধান নিউজ :: সিলেটে প্রায় ৯ বছর আগে এরকম বড় সমাবেশের আয়োজন করেছিল বিএনপি। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর নির্বাচনের আগে সেখানে মহাসমাবেশ করে দলটি। সেই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
আজ শনিবার সিলেট আলীয় মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। তবে গতকাল শুক্রবারই পুরো মাদ্রাসা মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে। মাঠেই পুরো রাত কাটান নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার বেলা বাড়ার সাথে সাথে সমাবেশ স্থলে নেতা-কর্মীদেরও ভিড় বাড়তে শুরু করেছে ।
এই ৯ বছরে সিলেটে আর বড় কোনও সমাবেশ করতে পারেনি দলটি। মামলায় সাজা হওয়ায় সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকা খালেদা জিয়া আজ সমাবেশে থাকছেন না। তবু নয় বছর আগের চাইতে এবার সিলেটে আরও বড় জমায়েত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আজ সিলেটে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে। এটি সিলেটের জন্য একটি ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে। আগের সব সমাবেশ থেকে আজকের সমাবেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ হবে।
গণসমাবেশে চার লাখ লোক জমায়েত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন কাইয়ুম।
এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আর প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গতকাল শুক্রবার তারা সিলেট পৌঁছে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সমাবেশকে ঘিরে সিলেটজুড়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন পর মাঠে বড় সমাবেশ করতে পেরে চাঙ্গা দলটির নেতা-কর্মীরা। সমাবেশের জন্য ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো নগর।
গণসমাবেশ সফলে মাসখানেক ধরে প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। পুরো বিভাগজুড়ে প্রচার চালিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। আর কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেটে থেকে সমাবেশের প্রস্তুতি কার্যক্রম সমন্বয় করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার থেকেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও বিভাগের বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন সমাবেশে। সময় সময় সমাবেশস্থলে বাড়ছে জমায়েত। আর গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে পুরো সিলেট পরিণত হয় মিছিলের নগরে। আজ শনিবারও ছোট-বড় মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে এগোচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করেই নৌকা, বাইক, ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহনে নেতা-কর্মীরা সিলেট আসেন। নগরের শাহজালাল (র.) মাজার, বিভিন্ন মসজিদেও রাত কাটতে দেখা গেছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের।
চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা’মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের সকল বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সিলেটে সমাবেশের আয়োজন করে দলটি।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটে গণসমাবেশের জন্য ৭০ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রশস্ত মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মঞ্চ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তুতি পুরোটাই নেয়া হয়ে গেছে। এখন সমাবেশ শুরুর অপেক্ষা।’
এদিকে গতকাল শুক্রবার সিলেটে পৌঁছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, জনগণের এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দিচ্ছে সরকার। জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে। পুলিশ দিয়ে, গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে হামলা করছে। তারপরও মানুষ দমে যাচ্ছ না। আপনারা দেখেছেন, মাদ্রাসা মাঠে আজকেই হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়েছেন।
ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে কোন নির্যাতন, কোন ফ্যাসিবাদ টিকে থাকবে না। জনগণের বিজয় অবশ্যই হবে।’