নিউজ ডেস্ক :: পুলিশের ছাব্বিশটি শর্ত মেনে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের কাছে গোলাপবাগ মাঠে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিএনপি গণসমাবেশ করছে।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের পক্ষে স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. তানভীর সালেহীন ইমন সই করা এক লিখিত স্মারকে এ তথ্য জানানো হয়।
শর্তগুলো হলো- ১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। ২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রের উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. গোলাপবাগ মাঠের ভেতরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের ভেতরে ও বাইরে উন্নত রেজুলেশনের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভিউকল স্ক্যানারের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯. গোলাপবাগ মাঠের বাইরে ও আশপাশে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
১০. গোলাপবাগে মাঠে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১১. গোলাপবাগে মাঠের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
১২. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
১৩. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৪. অনুমতি দেওয়া সময়ের মধ্যে সমাবেশের কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৫. সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থায় সমবেত হওয়াসহ যান ও মানুষ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না।
১৭. পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি-রড ব্যবহার করা যাবে না।
১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
২০. উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২১. মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।
২২. নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো পার্কিং করা যাবে না।
২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ করতে হবে।
২৫. উল্লেখিত শর্তাবলি পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৬. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
এদিকে, ঢাকা গণসমাবেশে অংশ নিতে এরই মধ্যে দলে দলে সিলেট থেকে রাজধানীতে গিয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢাকা যাত্রা অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার থেকে এ যাত্রা শুরু হয়।
ঢাকায় অবস্থান করা সিলেট বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে; শনিবারের গণসমাবেশ সফল করতেই তারা ঢাকায় গেছেন। সমাবেশ হবে, এ কারণে তারা গ্রেপ্তার এড়িয়ে নিরাপদে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, ঢাকায় অবস্থান করা সিলেটের নেতাকর্মীদের মধ্যে দু’জন আটক হয়েছেন। এর মধ্যে ৬ ডিসেম্বর বিএনপি কার্যালয়ের ভেতর থেকে আটক হন সিলেট মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জাহিদুল তালুকদার। আর বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টন থেকে আটক হয়েছিলেন ছাত্রদল নেতা খান রাসেল।
জানা গেছে- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বেগম তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. ইনামুল হক, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জিকে গৌছ, মৌলভীবাজার সভাপতি নাসের রহমান সহ সিলেট বিভাগের বিএনপি নেতারা এরই মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরীর বাসা ঢাকায়। এ কারণে তিনি দু’দিন আগেই সিলেট থেকে ঢাকায় চলে গেছেন।
তিনি বলেন- আমরা ঢাকায় আছি। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত কয়েক হাজার নেতাকর্মী সিলেট থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। নেতাকর্মীরা হোটেলে না থেকে নিরাপদ স্থানে রয়েছেন। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে- ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ সফল করা।সূত্র:: সিলেটভিউ