অনুসন্ধান নিউজ :: চা শ্রমিকদের বকেয়া এরিয়ার বিল দ্রুত পরিশোধ, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা, বন্ধ পাটকল,চিনিকল চালু, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যাবস্থা সহ বিভিন্ন দাবিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার দ্বিতীয় জেলা সম্মেলন আজ ২৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার, বিকাল ৩ টায়, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয় ।দ্বিতীয় জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক মোখলেসুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব প্রসেনজিৎ রুদ্র এর পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড জহিরুল ইসলাম এছাড়া বক্তব্য রাখবেন বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়,চা শ্রমিক ফেডারেশন এর জেলা সভাপতি বীরেন সিং সমাবেশের পূর্বে রেজিস্ট্রারী মাঠ থেকে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন, লাল পতাকা সহ শত শত শ্রমিকদের অংশ গ্রহণে একটি সুসজ্জিত র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে র্যালী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ হয়।
সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে কমরেড জহিরুল ইসলাম প্রথমেই আন্দোলনকারী সংগ্রামী চা শ্রমিকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন বাংলাদেশের সংগ্রামী চা শ্রমিকরা শ্রমিক আন্দোলনে নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। দীর্ঘ ১৯ দিন আন্দোলনের মাধ্যমে ৫০ টাকা মজুরি বাড়াতে সরকার ও মালিকপক্ষকে বাধ্য করতে সক্ষম হয়েছে।কিন্তু এখনও পর্যন্ত এরিয়ার বিল না দেয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বকেয়া এরিয়ার বিল দ্রুত পরিশোধ করার দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, এমন এক সময়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষ চরম দুর্দশাগ্রস্থ।করোনাকালে শ্রমিকদের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়েছে। সঞ্চয় শেষ, ঋনে জর্জরিত। বাজারের উপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চাল-ডাল-তেলসহ সব জিনিসের দাম।গ্যাস-বিদ্যুতের দাম,গাড়িভাড়া -বাড়িভাড়া -চিকিৎসা খরচ বাড়ায় শ্রমিকদের সংসার চালানোটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। সংবিধান অনুযায়ী সরকারের দায়িত্ব দেশের সকল কর্মক্ষম মানুষের জন্য কাজের ব্যাবস্থা করা। অথচ কোটি কোটি মানুষ বেকার, দেশে কাজ নেই। উল্টো রাষ্ট্রায়ত্ব ২৬ টি পাটকল ও ৬ টি চিনিকল বন্ধ ঘোষণা করে আওয়ামিলীগ সরকার লক্ষ লক্ষ মানুষকে বেকার করেছে। এখন আই এম এফ এর ঋনের শর্ত হিসেবে ১০ টি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারিকরণ করার চক্রান্ত চলছে। কাজ না পেয়ে বা হারিয়ে যখন ব্যাটারীচালিত রিকশা -ইজিবাইক চালিয়ে লক্ষ লক্ষ বেকার জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নিয়েছে,তখন তাও কেড়ে নেওয়ার আয়োজন চলছে। মহাসড়ক ছাড়া দেশের সব সড়কে ব্যাটারী রিকশা চলাচলে হাইকোর্ট রায় দিলেও, তাদের উপর চলছে পুলিশী বাঁধা ও নির্যাতন। নির্মাণ শ্রমিক সহ সকল অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদান, তাদের নিরাপত্তা, আর্মি – পুলিশের রেটে রেশন প্রদানের দাবি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত। সম্প্রতি চা শ্রমিকদের আন্দোলন দেখিয়ে দিল,মুনাফা ছাড়া মালিকরা কিছুই বোঝে না। তাই লড়াই করেই অধিকার ছিনিয়ে আনতে হয়।লড়াইয়ের জন্য দরকার আপোষহীন শ্রমিক সংগঠন, যারা মালিকের দালালী করবেনা। এ রাষ্ট্র, সরকার, আইন সবই মালিকের স্বার্থ রক্ষা করছে। এ মালিকী ব্যাবস্থা থাকলে শ্রমিকের মুক্তি নেই। ফলে এমন ধরনের শ্রমিক সংগঠন দরকার, যার আপোষহীন নেতৃত্বে শ্রমিকরা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করবে। বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সেই বিপ্লবী ধারার আপোষহীন শ্রমিক সংগঠন। এ সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য সকল সেক্টরের শ্রমিক ও দেশের আপামর জনসাধারণের প্রতি আহবান জানান।