নিউজ ডেস্ক :: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় গ্রাম্য সালিসে এক নারীকে (৩০) বেত্রাঘাত ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন হয়েছে। জেলা মহিলা পরিষদের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে পৌর শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন হয়। এতে মহিলা পরিষদের সদস্যরা ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন অংশ নেন।
মানববন্ধনে নারী নির্যাতন ও এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা। তারা বলেন, সালিসের নামে নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। হবিগঞ্জের বর্বরোচিত ঘটনা এটাই প্রমাণ করে। সেখানে মধ্যযুগীয় কায়দায় এক নারীকে প্রকাশ্যে নির্যাতন করা হয়েছে।
আয়োজক সংগঠনের জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সঞ্চিতা চৌধুরী বলেন, ‘এই বর্বর নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যে ব্যক্তি ওই নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে, তাকে ধরে শাস্তি দিতে হবে। অথচ তাকে না ধরে গ্রামের মাতব্বরেরা বেআইনিভাবে শাস্তি দিলেন নারীকে। এ ঘটনায় করা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি এবং এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারকে আরও কঠোর হতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শরিফা আশরাফীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের প্রবীণ সমাজকর্মী রমেন্দ্র কুমার দে, জেলা মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সঞ্চিতা চৌধুরী, সুনামগঞ্জের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগজ্জ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক খলিল রহমান, জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা পরিষদের প্রশিক্ষণ সম্পাদক কলেজশিক্ষক সবিতা বীর, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আসাদ মনি প্রমুখ।
৪ এপ্রিল রাতে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে সালিসে এক নারীকে ৮২টি বেত্রাঘাত এবং তার ওপর ৮০টি পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই নারীকে এক মাস ঘরে অবরুদ্ধ থাকার আদেশও দেওয়া হয়। এ ছাড়া সালিসকারীরা ঘোষণা দেন, সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘর থেকে বের হলে তাকে আরও ভয়াবহ শাস্তি দেওয়া হবে। ওই নারীর স্বামী প্রবাসী। পরে তিনি দেশে এসে থানায় মামলা করলে পুলিশ চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।