সিলেট সদরে অভিযান দুই দিনের মধ্যে পাথর মিল সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ

রিপোর্টার নামঃ
  • বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান ডেস্ক ::: সিলেট সদর উপজেলার এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় ২টি পৃথক পৃথক স্থানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ধুপাগুলে প্রায় ৩০টি পাথর মিলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানটি চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। পরে বেলা ১টার দিকে সাহেবের বাজার গিয়ে বাজারের ভিতর অংশে সরকারি তোহা বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানও চলে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। অভিযানে তোহা বাজারের সবকয়টি অবৈধ অস্থায়ী কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়।

উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, মহানগর রাজস্ব সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলাম।

জানা যায়, এয়ারপোর্ট বাইপাস মহাসড়কের আশেপাশে ধুপাগুল এলাকা থেকে সালুটিকর ব্রিজের সদর অংশ পর্যন্ত কয়েকশত পাথর মিল গড়ে উঠেছে। পরিবেশে ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে, পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা)’র পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়। মামলার রায়ে এ এলাকায় পাথর মিল বন্ধ রাখতে হাইকোর্ট আদেশ দেন।

এ ঘটনায় উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গনমাধ্যমে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, পরিবেশ সুরক্ষা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অবৈধ লাইসেন্সবিহীন স্টোন ক্রাশিং মেশিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৩০টি স্টোন ক্রাশিং মেশিন উচ্ছেদ করা হয় এবং অবশিষ্ট স্টোন ক্রাশিং মেশিন নির্ধারিত সময়ের ভেতর অপসারণের জন্য সময়সীমা দেওয়া হয়। ধোপাগুল এলাকায় স্থাপিত স্টোন ক্রাশিং মেশিন এর কারণে উক্ত এলাকার পরিবেশে বিপর্যয় নেমে এসেছে এবং জনস্বাস্থ্যে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া, এর পাশেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। এই এলাকায় স্থাপিত অধিকাংশ স্টোন ক্রাশিং মেশিন এর কোন লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। স্টোন ক্রাশিং মেশিন স্থাপন নীতিমালা, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) অনুসরণ না করেই অবৈধভাবে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। সিলেট জেলার অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিন অপসারণে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সাহেবের বাজারের ভিতর অংশের তোহাবাজারে গড়ে উঠা ছোট ছোট অস্থায়ী সবকটি কাঠামো ভেঙ্গে দেওয়া হয়। তোহাবাজার নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে একটি সিন্ডিকেট মহল অবৈধভাবে রমরমা ব্যবসা করেছিল। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বসার কোনো স্থান ছিল না, চক্রটি প্রতিটি ভিটা থেকে অবৈধভাবে ভাড়া দিয়ে কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতো বিপুল পরিমাণ অর্থ। পাশাপাশি এই তোহাবাজারের প্রতিটি ভিটা চক্রটি অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করতো। বিষয়টি সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলামের নজরে আসলে তিনি এ অভিযান চালান।

এবিষয়ে সিলেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, এ উচ্ছেদ অভিযানটি জেলা প্রশাসনের নির্দেশে করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ধোপাগুলে অবৈধ পাথর মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ধোপাগুল থেকে সালুটিকর সদর অংশ পর্যন্ত স্থাপিত অধিকাংশ স্টোন ক্রাশার মেশিনের কোন লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। স্টোন ক্রাশার মেশিন স্থাপন নীতিমালা, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) অনুসরণ না করেই অবৈধভাবে এসব স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পাথর মিলগুলো সড়িয়ে না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পরে সাহেবের বাজারের তোহাবাজার দখলমুক্ত করা হয়। সবকটি অবৈধ কাঠামো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তোহাবাজারের সীমানার মধ্যে কেউ স্থায়ী অবকাঠামো তৈরী করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার মনিটনিং অভিযান সবসময় অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের ইন্সপেক্টর মামুনুর রশীদ, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ, ব্যাটালিয়ান আনসার বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগণ, উত্তরগাছ ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain