অনুসন্ধান ডেস্ক :::সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়া নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। শনিবার রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত মাইকে ঘোষনা দিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষে জড়ায় তিন গ্রামের লোকজন। দুপুরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে এখনও এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জানা যায়, শনিবার বিকেলে উপজেলার বর্ণি গ্রামের এক ব্যক্তির সাথে মোবাইল ফোন চার্জ দেয়া নিয়ে কাঠাঁলবাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তির তর্কাতর্কি হয়। এ ঘটনায় এক পক্ষের লোকজন বর্ণি এলাকায় সড়কে গাড়ি আটক করে। পরে থানা সদরে কোম্পানীগঞ্জ, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী ৩ গ্রামের লোকজনের মধ্যে দেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে এটি সংষর্ঘে রূপ নেয়। প্রায় ৪ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েন। রাতে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এদিকে এ ঘটনার জেরব রবিবার সকাল থেকে সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন উপজেলার বর্ণি ও কাঠালবাড়ি গ্রামের লোকজন। সিএনজি চালিত অটেরিকশায় মাইক বেঁধে গ্রামের লোকজনকে সংঘর্ষের জন্য বেরিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। এতে করে পরিস্থিতি দ্রুত থমথমে হয়ে উঠে। এরপর সকাল ১১টার দিকে দুই গ্রামের লোকজন উপজেলার থানা বাজার পয়েন্টে এসে সংঘর্ষে জড়ান। সহস্রাধিক মানুষের সংঘর্ষ ঠেকাতে ব্যর্থ অয় পুলিশ। দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন।
পরে উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ বড় সংঘাত ঠেকানোর জন্য ফেসবুক লাইভে এসে সেনাবাহিনীর সাহায্য চাইতে থাকেন। বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী ও র্যাবের সদস্যরা। তাদের উপস্থিতি দেখে দুই গ্রামের লোকজনই সরে যেতে শুরু করেন। পরে দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে দেয় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী।
রোববারের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রাসেল। তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি আহত লোক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, শনিবার রাতে কোম্পানীগঞ্জে একটি দোকানে মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষ চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এসময় বেশকিছু দোকান ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আহত হন অন্তত ৫০ জন। রাতে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি বলেন, রোববার সকালে ফের মাইকে ঘোষণা দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী গ্রামের লোকজন একে অপরকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেয়। একইসঙ্গে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষে লিপ্ত হয় উভয়পক্ষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ নিক্ষেপ করে। দুপুরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় এখন পর্যন্ত থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।