শিরোনাম :
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে কোন সংস্কার কাজে আসবে না: বাম গণতান্ত্রিক জোট লাখো মানুষের ঢল ফুলতলীতে ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে অর্থ লুটপাট করেছে : বদরুজ্জামান সেলিম ৩১ দফা নারীর মর্যাদা, সুরক্ষা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করবে : কয়েস লোদী অনাথ শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণে শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ সিলেট আম্বরখানায় রিকশা চালকের আকস্মিক মৃত্যু সিলেট গণপূর্ত ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও মনোজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শীঘ্রই সচল হচ্ছে সিলেটের পাথর কোয়ারি-নিয়ে এলো সুসংবাদ সমৃদ্ধশীল রাষ্ট্র বিনির্মাণে তরুণদের কাজ করতে হবে: কয়েস লোদী সিলেট জেলা ও মহানগর ব্যবসায়ী দলের কমিটি গঠন

লাখো মানুষের ঢল ফুলতলীতে ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে

রিপোর্টার নামঃ
  • বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান ডেস্ক :: ১৫ জানুয়ারি (বুধবার) লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ফুলতলী ছাহেব বাড়ি সংলগ্ন বালাই হাওরে অনুষ্ঠিত হয়েছে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর ১৭তম ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল ঈসালে সাওয়াব মাহফিল। ধর্মীয় আবেগঘন পরিবেশ ও সুশৃঙ্খল এ মাহফিলে মুরিদীন-মুহিব্বীনের উদ্দেশ্যে তা’লীম-তরবিয়ত পেশ করেন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর সুযোগ্য উত্তরসূরী উস্তাযুল উলামা ওয়াল মুহাদ্দিসীন, মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব ফুলতলী।

তিনি বলেন, যুগে যুগে অনেক যালিমের আবির্ভাব হয়েছে। যালিম শাসকের উদাহরণ হিসাবে আমরা হাজ্জাজ বিন ইউসুফের নাম উল্লেখ করি। সে হুকুমত প্রতিষ্ঠা ও কর্তৃত্ব রক্ষার জন্য হাজার হাজার আলিম-উলামাকে হত্যা করে। এমন শাসক বাহাদুরী দেখানোর জন্য নানা প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করে থাকে। হাজ্জাজ প্রাসাদ নির্মাণ করেছিল। তা দেখে হাসান বসরী (র.) বলেছিলেন, নমরূদ প্রাসাদ এর চেয়ে আরো উন্নত ছিল। সে প্রদর্শনীর জন্য চারশত ঘোড়া রেখেছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাথে বেয়াদবীমূলকভাবে সে হযরত আনাস রা. কে বলেছিল, তোমার সাথি তথা রাসূল (সা.) এর এমন কোনো ঘোড়া কি ছিল? হযরত আনাস (রা.) প্রিয়নবী (সা.) এর বাণী উল্লেখ করে বলেছিলেন, ঘোড়া তিন শ্রেণির। বাহাদুরী প্রদর্শনের ঘোড়াকে তিনি দোযখের ঘোড়া বলেছিলেন, অর্থাৎ এটি দোযখে নিয়ে যাবে। একথা শুনে হাজ্জাজ অত্যন্ত রাগান্বিত হয়। কিন্তু হযরত আনাস (রা.) রাসূল (সা.) এর শেখানো দুআ পাঠ করায় সে তাঁর কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। আমাদের দেশের এক নাস্তিকও উম্মুল মুমিনীনদের শানে বেয়াদবীমূলক উক্তি করেছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও উম্মুল মুমিনীনদের সাথে বেয়াদবী থেকে বেঁচে থাকবেন। যারা তাদের সম্পর্ক খারাপ মন্তব্য করে তাদের সম্পর্ক মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবন উবাই’র সাথে হবে। কুরআন কারীমের প্রতি আদব প্রদর্শনের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, শাআইরুল্লাহ তথা আল্লাহর নিদর্শনাবলির সম্মান না করলে তাকওয়া বিনষ্ট হয়। খারিজীদের ইমাম আবু তাহের কারামিতী হাজরে আসওয়াদ খুলে নিয়ে গিয়েছিল। হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া তার মতে ছিল শিরক। সেই কারামিতীর অনুসারীরা আল্লাহর নিদর্শনসমূহে শিরক দেখে।

তিনি বলেন, মনের আবেগে দীন-দুঃখী মানুষের পাশে যাই। এতীম অনাথের সাথে মাটির আসনে বসি। এতে যে প্রশান্তি পাওয়া যায় অন্য কোথাও এমন পাওয়া যায় না। আল্লাহর ওয়াস্তে দীন-দুঃখী মানুষের খেদমত করবেন। আমরা কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি। বন্যা কবলিত কুমিল্লা, নোয়াখালীতে আমাদের উদ্যোগে গৃহনির্মাণ হয়েছে। কোথাও কারো ঘর আগুনে পুড়ে গেলে আমরা পুননির্মাণের চেষ্টা করি।

বৃক্ষরোপণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যদি কোনো মুমিন চারা লাগায়, ফসল ফলায় এবং তা থেকে কোনো মানুষ কিংবা পশু-পাখি খায় তাও সদকাহ হিসাবে গণ্য হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশের অবস্থা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আকার ধারণ করে। আমরা দুআ করি যুলমকারী কেউ যেন আমাদের মাথার উপর না বসে। শয়তানী চরিত্রের কেউ যেন আমাদের কর্তৃত্বে না আসে। হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে এমন কেউ যেন না আসে। কখনো কোনো পরিস্থিতির শিকার হলে আমরা যেন অবিচার না করি। আমরা যেন যালিম না হই, মজলুম না হই। আমরা যেন সর্বাবস্থায় ন্যায়ের উপর অবিচল থেকে শ্যামল-সুন্দর জন্মভূমির মানুষকে ভালোবাসি, হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকি।

সকাল সাড়ে ১০টায় হাজারো এতীমসহ উপস্থিত মুরীদীন-মুহিদীনদের নিয়ে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর মাজার যিয়ারতের মধ্য দিয়ে মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর খতমে কুরআন, খতমে বুখারী, খতমে খাজেগান, খতমে দালাইলুল খাইরাতের পাশাপাশি স্মৃতিচারণমূলক ও জীবনঘনিষ্ট আলোচনায় অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে অতিবাহিত হয় পুরো দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নজমুল হুদা খান, মাসিক পরওয়ানার সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী ও জার্মানির এরফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাওলানা মারজান আহমদ চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, প্রো-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হযরত আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী, মহাখালী গাউসুল আযম মসজিদের খতীব মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হ্যামলেটস বারার স্পিকার কাউন্সিলর ব্যারিস্টার সাইফুদ্দীন খালেদ, ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসা, চাঁদপুর এর অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, সিলেট সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ’র অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অফ গভর্ণরস মাওলানা মুসাদ্দিক বিল্লাহ আল মাদানী, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শহীদুল হক প্রমুখ।

মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, মুফতী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা এ.কে.এম মনোওর আলী, ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারি হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী, জালালপুর জালালিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জ. উ.ম আব্দুল মুনঈম, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, আমেরিকা প্রবাসী আলিমে দ্বীন মাওলানা আবূ আব্দিল্লাহ মো. আইনুল হুদা, মহাখালী কামিল মাদরাসা মুহাদ্দিস মাওলানা মাহবুবুর রহমান, জকিগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার সাবেক সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মোশাহিদ আহমদ কামালী, বুরাইয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুহিবুর রহমান, রাখালগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেহাব উদ্দিন আলীপুরী, মাওলানা আজিজুর রহমান প্রমুখ।

মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- দারুল হাদীস লতিফিয়া লন্ডন এর প্রিন্সিপাল মাওলানা ইলিয়াস হোসাইন, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রহীম, ইকড়ছই আলিম মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা ছমির উদ্দিন, চান্দাইরপাড়া সুন্নিয়া হাফিযিয়া ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর নুমান, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শামসুল ইসলাম, হলিয়ারপাড়া সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, লতিফি হ্যান্ডস এর জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা ছালেহ আহমদ বেতকোণী, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবূ ছালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম, রাখালগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা হবিবুর রহমান, ছাতক জালালিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল আহাদ, হবিগঞ্জ দারুসুন্নাত আলিয়া মাদরাসার উস্তায মাওলানা ফরিদ আহমদ, মাওলানা ফজলুর রহমান চৌধুরী শিঙ্গাইরকুড়ি, ভুরকী হাবিবিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার বড় হুজুর হাফিজ আব্দুশ শহীদ, ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সভাপতি মাওলানা আনোয়ার উদ্দিন তালুকদার, ভারতের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আজিজুর রহমান তালুকদার, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আলমগীর হোসেন, মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, সাবেক সহ সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, সাবেক সহ সভাপতি মাওলানা হুমায়ূনুর রহমান লেখন, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মনজুরুল করিম মহসিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম মনোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুজতবা হাসান চৌধুরী নুমান, মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এর সহ-সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মিল আলী শরীফ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাওলানা আব্দুর রহমান নিজামী, মাওলানা কাজী আলাউদ্দিন আহমদ, লতিফিয়া কারী সোসাইটি ঢাকা জেলা সভাপতি মাওলানা আবূ সাদেক মুহাম্মদ ইকবাল খন্দকার, গ্রেটার ম্যানচেস্টার বাংলাদেশ এসোসিয়েশন এর সাবেক চেয়ারম্যান ময়নুল আমীন বুলবুল, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ইউ ডোনেট ফাউন্ডেশন ইউকে এর চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান লস্কর প্রমুখ।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain