হঠাৎ ট্রেন বন্ধে সিলেটে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

রিপোর্টার নামঃ
  • মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান ডেস্ক :: মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় সারা দেশের মতো সিলেটেও কর্মবিরতি পালন করছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন রেলের যাত্রীরা। রেলের রানিং স্টাফদের মধ্যে রয়েছেন ট্রেনচালক, গার্ড, টিকিট চেকার ও অ্যাটেনডেন্স।

এদিকে কর্মবিরতির কারণে মঙ্গলবার দিনভর একটি ট্রেনও সিলেট ছেড়ে যায়নি। এতে অনেক যাত্রী টিকিট বাতিল করে রিফান্ড করেছেন।

শিডিউল অনুযায়ী সকাল ১০টা ৩০মিনিটে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, দুপুর ১২টায় ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকাগামী সুরমা মেইল, রাত ১০টায় চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ও রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ঢাকাগামী উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেট ছেড়ে যাওয়ার কথা। কর্মবিরতি অব্যাহত থাকায় এসব ট্রেন ছেড়ে যায়নি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট স্টেশনে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রী নাজমা বেগম বলেন, স্টেশনে এসে শুনতে পেয়েছি ট্রেন বন্ধ। বৃদ্ধ শাশুড়ি ও বাচ্চাদের নিয়ে বিপাকে পড়েছি। বাসে করে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

ভানুগাছের যাত্রী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকারের কর্মচারীরা কেন কর্মবিরতি করবে। এদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। যখনই নির্দেশনা আসবে ট্রেন ছেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, যেসব ট্রেনের শিডিউল বাতিল হয়েছে বা বাতিল হবে সে সব ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করা হবে। এখন টিকিট রিফান্ড শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিআরটিসি বাসে আগ্রহ নেই যাত্রীদের: রেলকর্মীদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে সিলেটে ট্রেনের বিকল্প হিসেবে বিআরটিসি বাসে আগ্রহ নেই যাত্রীদের।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে বিআরটিসির একটি বাস রাখা হলেও কোনো যাত্রী মেলেনি। যার কারণে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বাসটি যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করে। পরে সেটিকে স্টেশন এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বার্তায় জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে আজ ২৮ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলের বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটসমূহে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।’

জরুরি বার্তায় আরও বলা হয়, ‘ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা তাদের ক্রয়কৃত রেল টিকিটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং এসব স্থান থেকে ঢাকাতে এই সার্ভিসের মাধ্যমে আসতে পারবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু থাকবে।’

তবে রেল কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশনা দিলেও সিলেট থেকে বিআরটিসির কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সিলেট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্টেশনের সামনে একটি বিআরটিসি বাস এনে রাখে। কিন্তু কোনো যাত্রী বাসে করে নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে আগ্রহী ছিলেন না। যার কারণে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বাসটি অপেক্ষা করে চলে যায়।

তবে যাত্রীদের অভিযোগ, রেলের বিকল্প হিসেবে বাস রাখা হলেও এই ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয়নি সিলেট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে অনেকেই বিষয়টি জানেন না।

অবশ্য অনেকে বাসযাত্রা নিরাপদ মনে না করে টিকিটের টাকা রিফান্ড করে নিয়েছেন। অনেককে আবার ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকে সিলেট রেলেওয়ে স্টেশনে পরিবার পরিজন নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন মোস্তাফা মিয়া। তিনি বলেন, স্টেশনে এসে জানতে পারি ট্রেন চলাচল বন্ধ। সকাল থেকে অপেক্ষা করছি। কিন্তু ট্রেনের বিকল্প হিসেবে বিআরটিসি বাসে যাওয়া যাবে বিষয়টি স্টেশন থেকে বলা হয়নি। আমাদেরকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন চাকরিজীবী মহি উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি বাস যাতায়াত পছন্দ করি না। এখন যেহেতু ট্রেন নেই, তাই কী সিদ্ধান্ত নেব বুঝতে পারছি না। তবে বাসে করে ঢাকায় যাবো না।

এ বিষয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, রেলের বিকল্প হিসেবে বিআরটিসির একটি বাস আনা হয়েছিল। কিন্তু যাত্রী না থাকায় বাসটি চলে গেছে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain