অনুসন্ধান ডেস্ক :: আসন্ন রমজান মাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরভবনের সভাকক্ষে এক সভায় মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
সভায় গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১০০০ টাকা, মহিষ ৬৫০ টাকা, ছাগল/ভেড়া ৯৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়।
এ ছাড়াও সভায় রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, সেহরি ও ইফতারের সময় সাইরেন বাজানো ব্যবস্থা সচল রাখা এবং পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রশাসক ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মো. রেজা-উন-নবীর সভাপতিত্বে এবং সিলেট সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকারের পরিচালনায় সভায় সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সিসিকের সভায় জানানো হয়, সম্প্রতি সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে ৩৫ হাজার টিসিবির কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও কার্ড বিতরণ করা হবে। জনসাধারণের সুবিধার্থে খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় কার্যক্রম (ওএমএস) চালু রয়েছে। পাশাপাশি সিসিক কর্তৃপক্ষ দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ চান। সেটা হোক, কোনো সুপারশপ কিংবা খোলা বাজার।
সমাজের সব শ্রেণির মানুষ চায় জিনিসপত্রের দাম যেন ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে।
এসব বিষয় নিশ্চিত করতে সিলেট সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় সিসিকের প্রশাসক ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, বিগত দিনে সমাজের যেসব কারণে আমরা কষ্ট পেয়েছি। আমরা সেসব থেকে যতটুকু সম্ভব কাটিয়ে উঠতে চাই। পবিত্র রমজান মাস সিয়াম, সাধনা, ত্যাগ ও সংযমের মাস। পবিত্র রমজানের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য যেন বহাল থাকে, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। নগরবাসীর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, যানজট নিরসন, শহরের পরিচ্ছন্নতা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং, রাস্তা ও ফুটপাত চলাচলের উপযোগী রাখা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ বিশেষ করে সেহরি ইফতার ও তারাবিহর সময়ে, এই বিষয়গুলোতে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব। সিলেট সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সব দপ্তর একযোগে কাজ করবে।
ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। দোকান ও মার্কেটগুলোতে দ্রব্যমূল্যের তালিকা স্থাপন করবেন। গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া ও মুরগির মাংস নির্ধারিত দামে বিক্রি করবেন। ভেজালমুক্ত খাবার বিক্রি করবেন। রমজান মাসে সিটি করপোরেশন নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। ধর্মীয় ও সামাজিক দিক বিবেচনায় হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের সঠিক সময়ে তাদের প্রতিষ্ঠান খোলা ও বন্ধ রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। সিলেট আধ্যাত্মিক নগরী। তাই মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখার স্বার্থে সিনেমার পোস্টার লাগানো, অযথা মাইকিং ও আপত্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচার থেকে বিরত থাকা উচিত।
সভায় বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক সুবর্ণা সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ার উজ জামান, সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, সচিব মো. আশিক নূর, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আলী আকবর, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. শাহরিয়ার আলম, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) রাখী রাণী দাশ, জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপক মো. লিয়াকত আলী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মঈন উদ্দিন, সিলেট অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান তালুকদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন মজুমদার, গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদ, সিসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া সুলতানা, সিলেট জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপমা দাস প্রমুখ।