অনুসন্ধান ডেস্ক ::: অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের প্রায় ১৩৮ একরের বিশাল শাহ আরেফিন টিলার প্রায় পুরোটাই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। লুটেপুটে নিঃশেষ করার পর এই টিলা থেকে পাথর লুট ঠেকাতে এবার উদ্যোগী হয়েফে প্রশাসন। টিলা এলাকায় প্রবেশপথে স্থাপন করা হয়েছে লোহার বেষ্টনী, যাতে বড় ধরনের পাথরবাহী যানবাহন আর ভেতরে ঢুকতে না পারে। গত মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে শাহ আরেফিন মোড়ে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বেষ্টনীটি বসানো হয়।
এর আগে শাহ আরেফিন টিলা পরিদর্শনে গিয়ে পাথর লুটের চিত্র দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক। তিনি টিলার পাথর লুট বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিলে উপজেলা প্রশাসন একাধিক অভিযান চালিয়ে পাথর মজুতকারী কয়েকজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেন।
সরকারি খাস খতিয়ানের ১৩৭ দশমিক ৫০ একর জমিতে অবস্থিত শাহ আরেফিন টিলা ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। স্থানীয়দের মতে, প্রায় ৭০০ বছর আগে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর সফরসঙ্গী হজরত শাহ আরেফিন (রহ.) এখানে বিশ্রাম নিতেন। তার ‘আসন’ থেকে এই টিলার নামকরণ। লালচে ও আঠালো মাটির নিচে থাকা বিশাল পাথর উত্তোলন করতেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয়দের দাবি- টিলার প্রায় ৮৫ শতাংশ পাথর ইতোমধ্যে লুট হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানায়, নতুন লোহার বেষ্টনী বসানোর ফলে ট্রাক, পিকআপ, ট্রাক্টরসহ বড় যানবাহন টিলায় প্রবেশ করতে পারবে না। এতে পাথর লুট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ জানান, বেষ্টনী স্থাপনের স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। দিন-রাত নিয়োজিত থাকবে আনসার ও নিরাপত্তা প্রহরী। পাশাপাশি অন্য কোনো পথ দিয়ে পাথর বের করে নেওয়া না যায়, সে জন্য পুলিশের টহল আরও জোরদার করা হবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, শাহ আরেফিন টিলার পাথর যাতে কেউ পরিবহন করতে না পারে সেজন্য আমরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছি। তাছাড়া শাহ আরেফিন টিলার সাথে সংযুক্ত সকল রাস্তা এস্কেভেটর দিয়ে কেটে দেওয়া হবে।
ইউএনও আরো জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহনের সুবিধার্তে ব্যারিকেডটি তালা সিস্টেম করা হয়েছে। আনসার ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রয়োজনমতো তারা তালা খুলে গাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিবেন।