গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :::: সিলেটের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা গোয়াইনঘাট। যার একদিকে পাথরের ভূস্বর্গ ও অপরদিকে পর্যটক নগরী হিসেবে পরিচিত জাফলং ও বিছানাকান্দি জনপ্রিয়, অন্যদিকে কৃষি সম্ভাবনার এক বিশাল ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের তারুখাল, ঠাকুরবাড়ি, পন্নগ্রাম, কাইস্তগ্রাম, হাতিরখাল ও জয়নগর গ্রামে প্রায় ২০০ একর জমি দীর্ঘদিন বর্ষা নির্ভর ধান চাষে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার ঘটছে ভিন্ন দৃশ্য।
পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় স্থানীয় মানুষ এখন পুরোদমে কৃষিতে মনোনিবেশ করেছেন। এলাকায় উৎপাদিত সবজি ও কৃষিপণ্য স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি যাচ্ছে সিলেট শহর ও চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারেও।
কিন্তু কৃষিকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পানির অভাব। এর সমাধানে আখলুভাংগা নদীতে আব্দুল বশির, আকির উদ্দিন ও আলাউদ্দিনদের উদ্যোগে স্থানীয় কৃষকরা সম্প্রতি সেচ্ছাশ্রমে একটি অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেছেন। তাদের দাবি, একমাত্র সুইচ গেইট স্থাপনই পারে পানি ধরে রেখে এই বিস্তীর্ণ কৃষিজমিকে পুরো বছর চাষের আওতায় আনতে।
আখলুভাংগা নদীতে সুইচ গেইট স্থাপনের দাবীতে সিলেটের বিএডিসি (সেচ) বিভাগের একটি লিখিত আবেদনও করেছেন কৃষকরা।
এ ব্যাপারে সিলেট বিএডিসি (সেচ) বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান মৌখিকভাবে গেইট নির্মাণের যৌক্তিকতা স্বীকার করেছেন। ইতোমধ্যে বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন গোয়াইনঘাট সার্কেলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সেচ) আব্দুল কুদ্দুস।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি বলেন, ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নটি পুরোপুরি কৃষি উপযোগী। আমরা অনেকগুলো প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি, তবে বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা আছে। আখলুভাংগায় সুইচ গেইট হলে শীতকালেও চাষে বিপ্লব ঘটবে।
কৃষিবিদ নুরে আলম শামীম বলেন, অল্প সময় ও কম খরচে কৃষিই এখন লাভজনক। সরকারি সহায়তা পেলে এখানকার পরিশ্রমী কৃষকেরা কৃষিকে রূপান্তর করতে পারবেন।
কৃষক সালাউদ্দিন আল মাসুম জানান, ছোট নদীতে সুইচ গেইট হলে এই ইউনিয়ন কৃষিতে রোল মডেল হবে।
ব্যবসায়ী আবদুর রহিম রাজা বলেন,
সরকারি পরিকল্পনা ও সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন হয়ে উঠতে পারে সিলেটের অন্যতম কৃষি উৎপাদন কেন্দ্র। আর তাই এখানকার মানুষের স্বপ্ন এখন আখলুভাংগা নদীতে একটি সুইচ গেইট।
ছবি ক্যাপশনঃ গোয়াইনঘাট উপজেলার আখলুভাংগা নদীতে সেচ্ছাশ্রমে বাঁধনির্মাণ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।