অনুসন্ধান নিউজ :: নির্বাচন নিয়ে অবশেষ সিদ্ধান্তে এসেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। জানালেন আসন্ন ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সিটি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা।
শনিবার (২০ মে) বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে জনসভায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
জনসভায় বক্তব্যকালে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আর্দশে বিএনপির রাজনীতি শুরু করেছি। আমার জীবন থাকতে এই দলের ক্ষতি হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত নিবো না। অনেকেই আমাকে উকিল আব্দুস সাত্তার বানানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমি সেই সুযোগ কাউকে দিতে চাই না। এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন করার পরিবেশ নেই। বিশেষ করে ইভিএম নিয়ে নগরের মানুষজন জানে না। এটা ভোট কারচুপির মহা আয়োজন। আমি বাংলাদেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান, আমার মা জননী ও আমার শ্রদ্ধেয় আলেম-উলামাদের পরার্মশে এই নির্বাচন বর্জন করলাম।
এসময় আরিফ বলেন, অতীতে আপনারা আমার পাশে ছিলেন। আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় আপনারা আমর পাশে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি সেইসব কথা ভুলতে পারিনা। আমি আপনাদের সন্তান, আমি আপনাদের ভাই। আমি মেয়র না থাকলেও আপনাদের পাশে সবসময় থাকবো। আমাকে আপনারা ক্ষমা করে দিবেন।
এসময় আরিফ নগরবাসীকে ভোট বর্জন করার আহবান জানান।
এরআগে তিনি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নিজ বাসা কুমারপাড়া থেকে পায়ে হেঁটে হযরত শাহজালাল (র.) মাজারের উদ্দেশ্যে পৌছান। পরে মাজার জেয়ারত শেষে নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে বক্তাতা করেন আরফি। এসময় রেজিস্ট্রারি মাঠে দলীয় নেতা-কর্মীদের ভীর লক্ষ করা যায়। সমাবেশ উপলক্ষে রেজিস্ট্রারি মাঠে কানায় কানায় পূর্ণ হয় নেতা-কর্মীদের পদচারনায়।
প্রসঙ্গত- বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও গত এক মাস ধরে আরিফ তাঁর প্রার্থিতার বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখেন। ফলে সিটি নির্বাচন ঘিরে তাঁকে নিয়ে যে জল্পনা-কল্পনার অবসান তিনি নিজেই করবেন।
গত কয়েক দিন ধরে মেয়র আরিফ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন ও দলের সিদ্ধান্তের কথা ভেবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন। যদিও গতকাল ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দপুর জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিদের উদ্দেশে তাঁর দেওয়া বক্তব্যে মেয়র আরিফ নতুন করে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন। আরিফ বলেছেন, ‘আমি সব সময় সিলেটের জনগণের পাশে ছিলাম এবং আছি। যে অবস্থানেই থাকি না কেন, প্রিয় সিলেটের জনগণের পাশেই থাকব।’
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিষয়ে সংকেত রয়েছে এবং তা দু-চার দিনের মধ্যে জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন আরিফুল হক। যুক্তরাজ্যে সফরকালে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে ওই সংকেত পান। সংকেতটি লাল, না সবুজ; অর্থাৎ নির্বাচন করবেন কিনা, তার ব্যাখ্যা দিতে এক মাস সময় চেয়ে নেন। ফলে আজ দুপুরে রেজিস্ট্রারি মাঠের নাগরিক সমাবেশে আরিফুল কী ঘোষণা দেন, তারই প্রতিক্ষা করছেন প্রার্থী, ভোটার ও সাধারণ মানুষ।
আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তবে বিএনপি নেতা আরিফুল হক নাগরিক সমাজের ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে শুরু থেকেই গুঞ্জন রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আরিফুল হকের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকান্ডে এই গুঞ্জন ও নগরবাসীর কৌতুহল আরো বাড়িয়েছে।