শিরোনাম :
সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদলের সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল মতবিনিময় জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম-পরিকল্পনার সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্ত “অংশীজন সভা” বিশ্বনাথে বজ্রপাতে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু সিলেটে রামু ট্রাজেডির এক যুগকে স্মরণ করে প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন ঐতিহাসিক রামু ট্রাজেডি”এর প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরাম সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে চার জেলের মৃত্যু হৃদয়ে জকিগঞ্জ সিলেট এর সভা অনুষ্ঠিত আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক আম্বরখানা শাখার কেক কাটা ও দোয়া মাহফিল সিলেটে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভায় রাজীব আহসান আওয়ামী লীগ কখনো মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ছিলো না: ইমদাদ চৌধুরী

একদিকে মেয়ে হারানোর শোক, অন্যদিকে ‘মিথ্যা মামলায়’ হয়রানি-সংবাদ সম্মেলনে নারীর অভিযোগ

রিপোর্টার নামঃ
  • শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান নিউজ :: মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন আপন বোনের ছেলের সঙ্গে। কিন্তু তিনি জানতেন না, এই বিয়েই মেয়ের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াবে। নিভে যাবে মেয়ের জীবনপ্রদীপ। মেয়ে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠার আগেই মিথ্যা অভিযোগে বোনের দায়ের করা মামলায় হতে হচ্ছে হয়রানির শিকার।

শনিবার (১০ জুন) বেলা আড়াইটায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কেঁদে কেঁদে কথাগুলো বললেন মোগলাবাজার থানার হবিনন্দি গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী মোছা. জোছনা বেগম। তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছেলে সায়েদ আহমদ।

বক্তব্যে বলা হয়- জোছনার বোন রোসনা বেগম ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুনামপুর গ্রামের মজির উদ্দিনের ছেলে কামরুল হাসানের (৩০) সঙ্গে তার মেয়ে শেফালী বেগমের (৩০) বিয়ে হয় ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল। কামরুল উগ্র আচরণের হওয়ায় এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় পাত্র হিসেবে তাকে পছন্দ ছিলো না শেফালির পরিবারের। কিন্তু শেফালির ব্যক্তিগত পছন্দ থাকায় কামরুলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় তাকে। বিয়ের পর কিছুদিন ভালো গেলেও ধীরে ধীরে কামরুলের আসল রূপ বেরিয়ে আসতে থাকে। তুচ্ছ ঘটনাতেই শেফালিকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন কামরুল। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। কামরুলকে তার মা ও ভাই-বোনেরা উসকে দিতেন শেফালির বিরুদ্ধে। পান থেকে চুন খসলেই কামরুল ও তার পরিবারের সদস্যরা বেধড়ক মারধর শুরু করতেন শেফালিকে। এই নির্যাতনের ফলে দুবার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয় শেফালির। কিন্তু এর জন্য উল্টো শেফালিকেই দায়ী করেন তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

শেফালিকে নির্যাতনের জন্য কামরুল একটি বেতও রাখতেন ঘরে। শেফালি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো বলে শত নির্যাতনের শিকার হয়েও কামরুলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি বাবার পরিবারের কাছে। কিন্তু বিয়ের বছরখানেক পর যখন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকের নির্যাতনে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় শেফালিকে, তখনই বাবার বাড়ির লোকজন জানতে পারেন বিষয়টি। এসময় শেফালিকে মা-ভাই তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে একাধিকবার সালিশ-বৈঠক করে কামরুল আর এমনটি করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেফালিকে নিজের বাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু এরপরও শেফালির উপর নির্যাতন থেমে থাকেনি। ফলে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি একসময় মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শেফালি। এমন অবস্থায় ২ মাস আগে শেফালিকে বাবার বাড়িতে রেখে যান কামরুল। এরপর থেকে বেশ কয়েকদিন শেফালির কোনো খোঁজ রাখেননি কামরুল ও তার পরিবারের লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়- শেফালি বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় গত রমজানে হঠাৎ তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মোবাইল ফোন নাম্বারে ফোন দিয়ে বলেন- শেফালিকে তালাক দিয়ে কামরুল আবার বিয়ে করবেন। ফোনে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় শেফালিকে। এরপর আরও ভেঙে পড়ে শেফালি। একদম বিধ্বস্ত ও নির্বাক হয়ে যান তিনি। এরই মাঝে একদিন শেফালিকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যান কামরুল এবং ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় কৌশলে ডাক্তারি সব কাগজপত্র ও তার মোবাইল ফোন নিয়ে যান। পরে মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দিলেও এতে থাকা কথোপকথনের রেকর্ড এবং সব ডকুমেন্ট ডিলেট করে দেন কামরুল। এমন নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে শেফালি গত ৬ মে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তার মামার বাড়িতে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় ৮ মে শেফালির ভাই পারভেজ আহমদ মোগলাবাজার থানায় একটি আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করেন।

শেফালির মা জোছনা বেগম সংবাদ সম্মেলনে জানান- ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং নিজেরা শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে কামরুলের মা রোসনা বেগম তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধমকি প্রদান এবং তাদের খড়ের ঘর পুড়ানো হয়েছে বলে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এতে শেফালির ভাই পারভেজ আহমদ ও সাহেদ আহমদসহ কয়েকজন আত্মীয়কে আসামি করা হয়। কিন্তু এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই মামলা দায়েরের আগেই শেফালির পরিবার মামলা দায়ের করলেও কামরুলদের কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। উল্টো রুসনার মিথ্যা মামলার পর দুদিন পুলিশ জোছনাদের বাড়িতে হানা দিয়ে তল্লাশির নামে হয়রানি করেছে। পুলিশ নির্যাতিত পরিবারকে সহয়তা না করে উল্টো নির্যাতনকারীদের সহযোগিতা করছে।

‘মিথ্যা মামলা’ থেকে রেহাই পেতে এবং শেফালির নির্যাতনকারীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন জোছনা বেগম।

 

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain