নিউজ ডেস্ক :: বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) বাতিল চেয়ে তাদের ডাকা সংলাপে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।
তিনি বলেন, ‘কাকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন সংলাপ করবে? মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাবন্দী, মির্জা আব্বাস, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কারাবন্দী। বিরোধী দলের বড় বড় নেতারা কারাবন্দী।’
সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচনের কমিশনের বাতিল চাই। তার সঙ্গে কিসের সংলাপ? বর্তমান নির্বাচন কমিশন তো মানুষের মৃত্যু কামনা করে। যে মানুষের মৃত্যু কামনা করে, তার সঙ্গে কিসের সংলাপ করব? এই অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল চাই। তার সঙ্গে তো আমরা সংলাপে যাব না। বরং এই নির্বাচন কমিশন বাতিল করার দাবিতে এই মহাসমাবেশ ডেকেছি।’
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সবাই ঐক্যমত্য বলেও জানান ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রত্যেক মঞ্চ থেকে একই বক্তব্য এসেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যুগপৎ আন্দোলন আমরা করিনি। আমাদের দাবির প্রতি প্রত্যেকের ঐক্যমত আছে। কর্মসূচিতে সবাই এখনো ঐক্যমত পোষণ করেনি। সেটাও পরিস্থিতির সময় আমাকে বলে দেবে। ’
নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ‘এই গ্রেপ্তার জাতি সহ্য করবে না। অস্ত্রের মুখে যেমন ডাকাত মালিককে সামান্য সময় বন্দী করতে পারে। কিন্তু এটার স্থায়ীত্ব হয় না। সরকারকে বলব, আপনি অস্ত্রের মুখে মানুষকে দমাতে পারবেন, এটা স্থায়ীত্ব হবে না, মানুষকে দমাতে পারবে না। একদিন মানুষ জ্বলে উঠবে। মানুষ তাদের অধিকার বাস্তবায়ন করবেই করবে।’
এ সময় আগামীকাল শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, ‘আমাদের মোটামুটি প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, প্রশাসনের মাধ্যমে লিখিত অনুমতি পেয়েছি। ’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘টাকা নিয়েও কিছু কিছু জেলায় বাস এবং লঞ্চ মালিক সমিতি পরিবহন দিতে গড়িমসি করছে। প্রশাসনও নেতাকর্মীদের ঢাকায় না আসার জন্য হয়রানি করার মতো টেলিফোনে কিছু হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। ’
প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একমুখী আচরণ করবেন না। আপনারা জনগনের বন্ধু হন। জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব।’ এই মহাসমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত মহাসমাবেশ সমাপ্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শঙ্কামুক্ত নই। কারণ, কখন সরকার কী পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা তো জানা যায় না। মহাসমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা নিরাপদে বাড়ি না পৌঁছানো পর্যন্ত আমরা শঙ্কমুক্ত হতে পারব না। সর্বাকালের বড় মহাসমাবেশ হবে। এটা তো ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ নয়; এটা দেশের সাধারণ মানুষের মহাসমাবেশ।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম, ইমতিয়াজ আলম, কে এম আতিকুর রহমান, আহমদ আবদুল কাইয়ুম, সৈয়দ বেলায়েত হোসেন,দেলোয়ার হোসেন সাকী শহিদুল ইসলাম কবির প্রমূখ।