অনুসন্ধান ডেস্ক :: জিয়াবাদ বলে বিএনপি কিছু আবিষ্কার করেনি, বরং যারা জিয়াবাদ আবিষ্কার করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যারা বিএনপির বিরোধিতা করছে তারা জিয়াবাদ আবিষ্কার করেছে। বিএনপি কখনো জিয়াবাদ আবিষ্কার করতে পারেনি। আমরা জিয়াউর রহমানকে কোনোদিন মহামানব বানাইনি। আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কখনো জিয়াউর রহমানের মূর্তি বানিয়ে রাস্তায় বসাইনি। কোনো বিশিষ্ট জায়গায় জিয়াউর রহমানের পোস্টার টানাইনি। জিয়াউর রহমানকে আমরা দলীয় চর্চার মধ্যে, তার জিনিসগুলো আলোচনা করেছি। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিএনপি তিন বার ক্ষমতায় থাকতে আমরা জিয়াউর রহমানকে মূলধন করে রাজনীতি করিনি। যারা জিয়াবাদ আবিষ্কার করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য ভালো না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে অনেকে সংস্কারের সবক দিচ্ছে, ৬ বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া ভিশন টুয়েন্টি-থার্টি’র মাধ্যমে যে সংস্কারের কথা বলেছে। যে দুইবারের অধিক কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, এগুলো ছয় বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন। হাসিনা পরবর্তী যে বাংলাদেশ হবে এটাকে মাথায় রেখে খালেদা জিয়া কথাগুলো বলেছেন। এ সংস্কারগুলো দরকার হবে আগামীর বাংলাদেশে। আজকে তারা সে কথাগুলো আমাদের বলতেছেন। আমাদের তারা আবার আমাদের কথাগুলো বলছেন। আবার সংস্কারের সবক দিচ্ছেন। এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। ’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির জন্মই হয়েছে দেশে সংস্কারের জন্য। জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত সংস্কার হয়েছে। বাংলাদেশের যত ধরনের সংস্কার হয়েছে, সেটির ৯০ শতাংশ সংস্কার করেছে বিএনপি।’
তিনি বলেন, ‘ড. ইউনুসের নেতৃত্বে যারা আজকে সরকার গঠিত হয়েছে, আমরা সমস্ত জাতি, সমস্ত রাজনৈতিক দলের সমর্থনে এ সরকার গঠিত হয়েছে। এ সরকারকে আমরা সমর্থন দিয়ে যাব। কারণ, এ সরকারের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতায় আসবে। এজন্যই আমরা সবাই এ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করে সহযোগিতা করছি। এর বাইরে তো আর কিছু নয়। সুতরাং যারা সরকার পরিচালনা করছেন, তাদের প্রত্যেকটি পদক্ষেপে, প্রত্যেকটি কথা-বার্তা বলার আগে এ কথাগুলো মাথায় রাখবেন। তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না। ’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আর যদি কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বাংলাদেশের জনগণের মালিকানার, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে যদি অন্য কোনো পরিকল্পনা থাকে গণতন্ত্রের বাইরে, সেটা বোধহয় ভালো হবে না। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের সমর্থন থাকবে, কিন্তু এর বাইরে কিছু করতে চাইলে সমর্থন বেশিদিন থাকার কথা না।’
আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশ যে গর্তের মধ্যে পড়েছে, এখান থেকে যদি বের হতে হয় তাহলে একটা জাতীয় ঐক্য আমাদের গঠিত করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতিকে এ গর্ত থেকে বের করতে হবে। ’
জিয়া পরিষদের আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান ড. মো. শফিকুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জিয়া পরিষদের মহাসটিব ড. এমতাজ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মো. আব্দুল্লাহিল মাসুদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাল আজাদ, কে এস রতন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রবিউল ইসলাম।