নিউজ ডেস্ক :: শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশের এক কোটি মানুষকে করোনা প্রতিরোধক টিকার প্রথম ডোজ দিতে চাচ্ছে সরকার। এটি সফল হলে প্রথম ডোজের টার্গেট পুরণ হবে। এই কার্যক্রমের আওতায় শনিবার দিনভর পুরো সিলেট বিভাগে চলবে গণটিকাদান কার্যক্রম। সিলেট নগরীসহ বিভাগের চার জেলায় অন্তত: ৭ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিভাগীয় কার্যালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বলেন, কালকের (শনিবার) মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ দিয়ে শেষ করতে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। এর জন্য আজ (শুক্রবার) সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও সিলেটে চলছে টিকাদান কার্যক্রম। কাল (শনিবার) পুরো বিভাগে ৭ লাখ মানুষকে এ টিকা প্রদানের প্রস্ততি নিয়েছি আমরা। প্রতিটি ইউনিয়নে ৩-৫ শ মানুষকে দেওয়া হবে টিকার প্রথম ডোজ। আমাদের হাতে টিকাও পর্যাপ্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, শনিবার সিলেটে পূর্বঘোষিত প্রতিটি স্থায়ী-অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকাদানের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিভাগীয় কার্যালয়ের তত্বাবধানে সিভিল সার্জন কার্যালয়গুলোর সহায়তায় পুরো বিভাগে ৪০টি ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করবে। এই টিমগুলো ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্থানে ভাসমান লোকজনকে টিকা প্রদান করবে।
ডা. হিমাংশু লাল রায় আরও বলেন, বিশেষ করে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়েসিরা পার্শ্ববর্তী নির্ধারিত স্থায়ী-অস্থায়ী কেন্দ্রে- যেখানে ফাইজারের টিকা আছে সেখানে গিয়ে ভ্যাকসিন প্রদানের আহ্বান করা যাচ্ছে।
এদিকে, শনিবার সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি কেন্দ্রে ‘জনসন এন্ড জনসন’র টিকা দেয়া হবে। এদিন সিসিকের ২৭টি ওয়ার্ডের ৯৬টি কেন্দ্রে সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত গণটিকা কার্যক্রম বিরামহীনভাবে চলবে। নগরীতে এখনও যারা কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ করেননি তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে টিকা গ্রহণ করার জন্য সিসিকের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সিসিক জানায়, যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি সেসব নাগরিকগণ জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধনপত্র নিয়ে কেন্দ্রে এসে টিকা গ্রহণ করবেন। যাদের এর কোনটিই নেই তারাও টিকা কেন্দ্রে এসে টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
যারা ইতিমধ্যে সুরক্ষা এপসে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন কিন্তু কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ করেননি তারাও শনিবার টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। পরবর্তীতে তারা টিকা গ্রহণের তথ্য সুরক্ষা এপসে হালনাগা করাতে পারবেন নগরভবনে স্থাপিত তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে।
যারা রেজিষ্ট্রেশন ব্যতিত গণটিকা ক্যাম্পেইনে টিকা গ্রহণ করবেন তাদেরকে কেন্দ্র থেকে একটি সরকারি টিকা কার্ড প্রদান করা হবে।
এদিকে, সিলেট নগরী ও শহরতলিতে ভাসমান মানুষের জন্য ৫ দিনব্যাপী বিশেষ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়। ৩-৫ টি টিমের মাধ্যমে পরিচালিত এ কার্যক্রমের শুক্রবার ছিলো শেষ দিন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় এ কার্যক্রম। ২১ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত- এই ৪ দিনে সিলেট নগরী ও শহরতলির ১৬০০ ছিন্নমূল বা ভাসমান মানুষকে দেওয়া হয়েছে ‘জনসন এন্ড জনসন’ টিকা। বৃহস্পতিবার বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে চলে ভ্রাম্যমাণ টিমগুলোর টিকাদান কার্যক্রম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলি বাসস্ট্যান্ড, কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড, হযরত শাহজালার (র.) মাজার এলাকা, শাহপরান (র.) মাজার এলাকা, শাহসুন্দর মাজার এলাকা, পীরের বাজার, কদমতলী রেলস্টেশন এলাকাসহ নগরী ও শহরতলির যে সব এলাকায় ভাসমান মানুষের সন্ধান মিলেছে সেখানেই তাদের ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘জনসন এন্ড জনসন’ কোভিড টিকা এক ডোজই যথাযথ সুরক্ষা প্রদান করে। এই টিকা গ্রহণকারীদের ২য় বার টিকা গ্রহণ করতে হবে না। এই ভ্যাকসিন সিঙ্গেল ডোজ হিসেবেই প্রস্তুত করা হয়েছে।