ক্যান্সার আক্রান্ত প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন প্রবাসী

রিপোর্টার নামঃ
  • শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০২২
  • ২৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: হবিগঞ্জে ক্যান্সার আক্রান্ত প্রেমিকাকে বিয়ে করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ওমান প্রবাসী ইসমাঈল হোসেন। স্ত্রীর সকল চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি। এ বিয়ের খবরে প্রবাসী ইসমাঈল এলাকাবাসীর প্রশংসায় ভাসছেন।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৫ সালে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পারকুল গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে ইসমাঈল হোসেনের সঙ্গে একই উপজেলার আমকান্দি গ্রামের আমির আলীর মেয়ে জবা ফরাইজির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৭ সালে জবা অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক দেখান। একপর্যায়ে চিকিৎসকরা জানান- জবার ব্ল্যাড ক্যান্সার হয়েছে। এ অবস্থায় জবা নিজেই ইসমাঈলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এরপর ইসমাঈল চলে যান ওমানে।

এদিকে জবার চিকিৎসায় স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এগিয়ে আসে। চিকিৎসা করিয়ে তাকে কিছুটা সুস্থ করে তোলা হয়। ২০২১ সালে আবারো ইসমাঈল ও জবার মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়।
গত ১৪ জানুয়ারি ওমান থেকে দেশে ফেরেন ইসমাঈল। দেশে ফেরার পর ক্যান্সার আক্রান্ত প্রেমিকা জবাকে বিয়ের জন্য পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেন। সিদ্ধান্ত নেন অসুস্থ জবাকেই তিনি বিয়ে করবেন। সেই মোতাবেক গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জবাকে দেড় লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন ইসমাঈল।

এদিকে জবা ও ইসমাঈলের বিয়ের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই বিয়েকে মানবতার দৃষ্টান্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এ ব্যাপারে প্রবাসী ইসমাঈল হোসেন বলেন, আমি চাই না কোনো মানুষ আক্ষেপ নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিক। আজকে যদি আমার কিছু হয়, কিছুই করাই নেই। ভাগ্যকে মেনে নিতে হবে। অসুখ-বিসুখ ও দুর্ঘটনা কারো হাতে নেই। সবই ভাগ্যের খেলা। আজকে সুস্থ, আগামীকাল অসুস্থ হয়ে যেতে পারি। কিছুই করার নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আবার প্রবাসে ফিরে যাব। আমি বিদেশে থাকলেও জবার চিকিৎসার কোনো অবহেলা হবে না। আমি আমার স্ত্রীর যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করব।

জবার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা অ্যাডভোকেট মোস্তাক বাহার বলেন, জবা ও ইসমাঈলের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। ২০১৭ সালে জবার ক্যান্সার ধরা পরার পর নিজে স্বেচ্ছায় ব্রেকআপ করে। সম্প্রতি ইসমাঈল দেশে আসার পর আমার কাছে জবাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমি উভয় পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে পারিবারিকভাবে বিয়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, জবার চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয় এবং প্রতি মাসে রক্ত পরিবর্তন করতে হয়। এ জন্য অনেক ব্ল্যাড ডোনার তৈরি আছে।
উপজেলার রানীগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রিপন বলেন, তাদের বিয়েটি একটি মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পাশপাাশি ভালোসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ইসমাঈল। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখী হোক আমরা এই কামনা করি।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain