নিউজ ডেস্ক :: সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন কিনা সেই বিষয়টি নিশ্চিত হতে মরদেহের ডিএনএ টেস্ট করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। কবর থেকে মরদেহ তুলে আলামত সংগ্রহ করে এবং তার আপন ভাই ও সন্তানের চুল বা কোনো আলামত নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন বলে সম্প্রতি খবর প্রকাশ হয়। গণমাধ্যমে এ খবরও আসে যে তিনি ১১ বছর ঢাকায় অবস্থা্ন করছিলেন ভিন্ন নামে।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে আদালতের অনুমতি নিয়ে কবর থেকে মরদেহ তোলা হবে।’ ডিএনএ টেস্ট করলে সব রহস্যের জট খুলবে বলে মনে করেন ইমাম হোসেন।
সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে খবর এসেছে হারিছ চৌধুরী মাহমুদুর রহমান নাম ধারণ করে ও এই নামে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে প্রায় ১১ বছর ঢাকায় অবস্থায় করছিলেন। ইন্টারপোলের রেড নোটিসের প্রেক্ষিতে গোয়েন্দার চোখে ধুলা দিতে তিনি ছদ্মবেশ ধরেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ৩ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয় বলে খবর প্রচার হয়।
কিছুদিন আগে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে তার চাচাতো ভাই আশিক চৌধুরী ফেসবুক স্ট্যাটাসে আবেগমাখা একটি স্ট্যাটাস দেন, যা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর ইঙ্গিত দেয়। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, হারিছ চৌধুরী লন্ডনে মারা গেছেন।
এরই মধ্যে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামীরা তানজীন চৌধুরী (মুন্নু) জানান, তার বাবা গত ৩ সেপ্টেম্বরে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যু, দাফন ও ঢাকায় আত্মগোপনে থাকাসহ নানা তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
এসব খবরে মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে হারিছকে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের জালালাবাদের কমলাপুর এলাকায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়ীন মাদ্রাসার কবরস্থানে ৪ সেপ্টেম্বর দাফন করা হয় বলেও দাবি করা হয়। গণমাধ্যমে এমন তথ্য প্রকাশের পর পুলিশ এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি মাহমুদুর রহমানই হারিছ চৌধুরী কিনা।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন। এতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বহু নেতাকর্মী আহত হন। ওই হামলার ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর আদালত ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেন। দণ্ড পাওয়া এ আসামিদের মধ্যে হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জন ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে আত্মগোপনে চলে যান।