অনুসন্ধান নিউজ :: ইতিহাসের বরপুত্র, বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু, চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের উপদেষ্টা, ত্রয়োদশ সংঘরাজ, চট্টগ্রামের প্রাচীনতম চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট সমাজকর্মী, শিক্ষানুরাগী, অনাথপিতা, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিক্ষার বাতিঘর, বহুগ্রন্থের প্রণেতা, ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির ২০২২ সালে একুশে পদক লাভ করায় চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এক নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিএইচআরসি’র উপদেষ্টা ব্যাংকার দুলাল কান্তি বড়ুয়া। চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি, ইতিহাসবেত্তা সোহেল মো. ফখরুদ-দীনের সঞ্চালনায় এই নাগরিক সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইখতেখার উদ্দিন চৌধুরী। উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান লায়ন রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী পুলক কান্তি বড়ুয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন একুশে পদক বিজয়ী, পদার্থবিজ্ঞানী ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএসটিসি)’র প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, পোস্ট ডক্টরাল খান মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম হাবিবী, এস এম সিরাজউদ্দৌলা, ড. সংঘপ্রিয় মহাথেরো, ড. অর্থদর্শী বড়ুয়া, কবি মাহামুদুল হাসান নিজামী, অধ্যাপক ড. রিটন কুমার বড়ুয়া, ড. সবুজ বড়ুয়া শুভ, অধ্যাপক আবদুল আলিম, কবি পূরবী বড়ুয়া, প্রকৌশলী মৃণাঙ্ক প্রসাদ বড়ুয়া, অধ্যাপক সজীব বড়ুয়া, অধ্যাপক প্রকৌশলী মৃণাল বড়ুয়া, ড. দীপঙ্কর থেরো, অধ্যাপক প্রিয়বর্ধন বড়ুয়া, প্রাক্তন এডিসি অরবিন্দ বড়ুয়া, অধ্যাপক জীতেন্দ্র লাল বড়ুয়া, উৎপল বড়ুয়া, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইউনুস কুতুবী, নাজমুল হক শামীম, দেলোয়ার হোসেন মানিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল উদ্দিন, মাওলানা আনোয়ার হোসেন, রিটন বড়ুয়া, প্রবীণ আইনবিদ এড. মুকুল কান্তি দেব, দীপঙ্কর বড়ুয়া, অমর কান্তি দত্ত, রূপম মুৎসুদ্দী টিটু, সাফাত বিন সানাউল্লাহ, অধ্যাপক সজীব বড়ুয়া, ভদন্ত এল অনুরুদ্ধ মহাথেরো, সোমা মুৎসুদ্দী, সৈয়দ শাহাবুদ্দিন আজিজ, আহমদ নবী, লায়ন শওকত আলী সেলিম, মায়জুননেসা আকতার, শিউলি খাতুন, লায়ন উজ্জ্বল কান্তি বড়ুয়া, প্রকৌশলী সৌমেন বড়ুয়া, উদয়ন বড়ুয়া ঝন্টু, অধ্যাপক দিদারুল আলম, শিহাব ইকবাল, লিটন বড়ুয়া, শিক্ষিকা পাপড়ি বড়ুয়া, মিনা দাশ, হারাধন দত্ত, আমিরুল ইসলাম, পাভেল বড়ুয়া প্রমুখ।
সংবর্ধনা সভায় বক্তারা বলেছেন, চট্টগ্রামের আলোকিত পণ্ডিত মনীষী ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির একজন কিংবদন্তি মহামানুষ। সমাজকর্মে তাঁর জীবনকর্ম সত্যিই মানবজাতির জন্য কল্যাণকর। অসহায়-অনাথ-এতিম শিশুদের শিক্ষায় লালন-পালন করে হাজার হাজার শিশুকে তিনি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষাদানের মাধ্যমে দেশগড়ার কারিগর হিসেবে গড়ে তুলেছেন। একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু লাল কাপড়ের এই আবরণ থেকে তিনি মহামানুষে পরিণত হয়েছে। সর্বজনের কাছে তিনি একজন সমাজশিক্ষক। ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবিরের চট্টগ্রামে জন্মগত কারণে তাঁর জন্মভূমি আজ তিনি নন্দিত জন্মভূমি হিসেবে বাংলাদেশ ও বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছেন। সভায় বক্তারা ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবিরকে একুশে পদক প্রদান বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেছেন, একজন প্রকৃত সমাজকর্মীকে মূল্যায়নের মাধ্যমে সমাজসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। সংবর্ধনা সভায় ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির বলেছেন, মানবজন্ম সত্যিই মহানুভবের। এই জন্ম প্রত্যেক প্রাণির হয় না। যারা মানুষ হয়ে জন্ম নিয়ে মনুষ্যত্ববোধের বিকাশ ঘটাতে পেরেছেন তারাই সত্যিকার মহামানুষ। আমাদের সকলের উচিত মানবকল্যাণের মাধ্যমে নিজের জীবন উৎসর্গ করা। তাতেই মানবজীবনের সার্থকতা। আসুন সকলে মিলে অসহায়-অনাথ-ছিন্নমূল মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে আলোকিত জীবনদানের জন্য নিজের অবস্থান থেকে একটু চেষ্টা চালাই। তিনি চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রকে সাধুবাদ জানিয়ে ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের আরও অগ্রগতি কামনা করেছেন। নাগরিক সংবর্ধনা সভায় ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবিরকে তাঁর জীবনকর্মকে স্মরণীয় করতে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র ও নাগরিক সংবর্ধনা কমিটির পক্ষ থেকে ‘ধর্মসাগর’ উপাধি দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।