শিরোনাম :
বিজিবি অভিযানে ১কোটি ২১ লক্ষ টাকার চোরাচালান জব্দ গোয়াইনঘাটে প্রত্যাশা কিন্ডার গার্টেন’র বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন বিএনপি নেতা তারেক কালামের জানাযায় মানুষের ঢল বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলনে ১২ বিষয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা আবেদনের নতুন প্রক্রিয়া চালু করছে মার্কিন দূতাবাস ব্যাপক সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবে কমিশন সিলেট বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী গীতিকার আছাব আলীকে সংবর্ধনা ৩১ দফা হলো জাতীয় রূপরেখা গঠনের নতুন দিগন্ত: সাহেদ আহমদ মিরাবাজারে কোতোয়ালী পূর্ব জামায়াতের শীতবস্ত্র বিতরণ

হাওর এলাকার কৃষকদের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে-বন্যার শঙ্কা নেই

রিপোর্টার নামঃ
  • সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৬৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: উজানের পানির চাপে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের নজরখালী বাঁধ ভেঙে শনিবার সকাল থেকে পানি ঢুকতে শুরু করেছে টাঙ্গুয়ার হাওরে। ফাটল দেখা দিয়েছে আরও কয়েকটি ফসল রক্ষা বাঁধে। এসব কারণে হাওর এলাকার কৃষকদের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। তবে এখনই বন্যার কোনো শঙ্কা নেই বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। আবার উজানে ভারি বৃষ্টিপাত হলে যে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে সে বিষয়টিও উল্লেখ করেছে অধিদপ্তর।

হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের একমাত্র ফসল বোরো ধান। কারণ এ জেলার ছোট-বড় ৯২টি হাওর বছরের বেশিরভাগ সময়ই পানির নিচে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, এ বছর সুনামগঞ্জে ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

সিলেট অঞ্চলে মার্চ থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ে বৃষ্টি হয় বেশি। সে সময় পাহাড় থেকে ঢল এসে নামে হাওর এলাকায়। এতে মার্চ এপ্রিলে দেখা দেয় আগাম বন্যা। প্রতি বছরই আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় হাওরে নির্মাণ করা হয় বাঁধ।

ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। বোর্ড আগে ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাঁধের নির্মাণ করতো। তবে ২০১৭ সালের ফসলহানির পর সমালোচনার মুখে এই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়।

২০১৮ সাল থেকে স্থানীয় উপকারভোগীদের সমন্বয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে। প্রতিটি বাঁধের জন্য স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) আহ্বায়ক ও উপজেলা পাউবো কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে গঠন করা হয় আলাদা আলাদা পিআইসি।

তবে নির্মাণকাজে পরিবর্তন আনা হলেও বন্ধ হয়নি অনিয়মের অভিযোগ। এ কারণে বাঁধের উপর আস্থা নেই কৃষকদের।

তাহিরপুরের মাটিয়াইন হাওরপাড়ের কৃষক আবিদ হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টিও থামছে না। ফসল নিয়ে আমরা খুবই শঙ্কায় আছি।’

কৃষকরা রাত জেগে বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার ফসল তলিয়ে গেলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।’

যা বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সরবরাহ করা আবহাওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার ও শনিবার সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্ত সংলগ্ন ভারতীয় অংশে এবং ভারতের মেঘালয় প্রদেশের চেরাপুঞ্জিতে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে সুনামগঞ্জের সুরমা, ধোলাই ও অন্যান্য প্রধান নদ-নদীতে পানি সমতলে বেড়েছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীর পানি সমতলে কমতে পারে।

রোববার সরবরাহ করা ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী ৪৮-৭২ ঘণ্টায় ফের ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে ফের বাড়তে পারে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি। কিছু পয়েন্টে তা বিপদসীমার কাছাকাছিও যেতে পারে। তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি নেই।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী রোববার বলেন, ‘সুনামগঞ্জে আজ ও কাল বৃষ্টি হলেও আগের চাইতে কম হবে। আশা করি এরপর থেকে আর বৃষ্টি থাকবে না। তবে উজানে এখন বৃষ্টিপাত কম থাকলেও তা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

প্রশাসনের কী পদক্ষেপ

হাওরের পানি দেরিতে নামা, ইউপি নির্বাচনসহ নানা কারণে নির্ধরিত সময়ে বাঁধের কাজ শুরু করা যায়নি বলে জানিয়েছেন পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা।

তিনি বলেন, ‘এখন আর কোনো কাজ বাকি নেই। ঢলে কিছু বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। এগুলো আমরা মেরামত করে দিচ্ছি। কোনো পিআইসির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেলেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বাঁধের কাজ সব শেষ। তবে যে বাঁধগুলো ত্রুটিপূর্ণ এবং সংস্কারের প্রয়োজন সেগুলোর কাজ করা হচ্ছে। আমরা চাই না সুনামগঞ্জে আর একটি ফসলও নষ্ট হোক। সবাইকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain