অনুসন্ধান নিউজ :: ৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাগানের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সের দাবি জানিয়েছিলেন সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিক শ্যালী গোয়ালা। প্রধান দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই মাসের মধ্যে নিজের প্রতিশ্রতি রাখেন প্রধানমন্ত্রী। অ্যাম্বুলেন্স পেলেন লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চা শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে লাক্কাতুরা চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি তুলে দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান বলেন, ৩ সেপ্টেম্বর চা শ্রমিকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের বাগানের রোগিদের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের দাবি জানান। ওই মতবিনিয় সভার পরই প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে নির্দেশ দেন। মন্ত্রণালয় থেকেও আমাকে তখনই অ্যাম্বুলেন্স প্রদানে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। কিন্তু এই অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাপনা কিভাবে হবে, কোথায় রাখা হবে এসব এসব নিয়ে একটু সমস্যা ছিলো। এগুলো সমাধান করতে কিছুদিন দেরী হয়ে গেছে। তবে চা শ্রমিকদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।
অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে অ্যাম্বুলেন্সের দাবি করা শ্রমিক শ্যামলী গোয়ালাও। তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বাগানে কোন অ্যাম্বুলেন্স নাই। তাই কোন শ্রমিক অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে খুব সমস্যা হয়। বিশেষত গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে অনেক কষ্ট হয়। অনেকক্ষেত্রে ট্রাক্টর দিয়ে রোগী হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। কেউ কেউ ঋণ করে গাড়ি ভাড়া করে রোগী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
শ্যামলী বলেন, সময়মত হাসপাতালে নিতে না পারায় অনেক রোগী মারাও যায়। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে অ্যাস্বুলেন্স দাবি করেছিলাম। কিন্তু এত দুত যে আমার দাবি পুরণ হয়ে যাবে তা কল্পনা করিনি। প্রধানমন্ত্রীকে এজন্য অসংখ্য ধনব্যদ। তিনি দীর্ঘজীবী হোন। আমাদের মাথার উপরে যেনো ছায়া হয়ে থাকেন।
বাগানের ম্যানেজার বাংলোর সামনে চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, বাগান কর্তৃপক্ষ, চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাজু গোয়ালা বলেন, এই অ্যাম্বুলেন্স পেয়ে বাগানের সব শ্রমিকরা উপকৃত হবে। অবেহলিত চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
উল্লেখ্য, মজুরি বৃদ্ধির দাবি অক্টোবরে কর্মবিরতি দিয়ে আন্দোলনে নামেন চা শ্রমিকরা। ৩ সেপ্টেম্বর আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হন শেখ হাসিনা।
এসময় লাক্কাতুরা চা বাগান থেকে যুক্ত হয়ে এই বাগানের শ্রমিক শ্যামলী গোয়ালা বাগানের শ্রমিকদের জন্য চিকিৎসক প্রদান, হাসপাতাল প্রদান, ভূমির অধিকার প্রদানসহ বিভিন্ন দাবি জানান।
ওই সভায়ই অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন- ‘চিকিৎসার ব্যবস্থা…. অ্যাম্বুলেন্স চাওয়া হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স তো দেবই। এই মাতৃত্বকালীন যেন কেউ কষ্ট না পায় সে ব্যবস্থা করব। দ্রুত যাতে চিকিৎসা পান সে ব্যবস্থা করব। কমিউনিটি ক্লিনিক আমরা করেছি, সেখানে কিন্তু মাতৃত্বকালীন চিকিৎসাটা আমরা বিনা পয়সায় দিই, ওষুধ দিই। কাজেই যেখানে যেখানে বাগান আছে, তার আশেপাশে এই ক্লিনিকগুলো আছে কি না সেটা দেখব।’