নিউজ ডেস্ক :: রোববার শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া হলো না ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদী গ্রামের আবুল কালাম মাতুব্বরের ছেলে আছাদ মাতুব্বরের (২২)।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে রয়েছে নানান কথা। পরিবারের দাবি স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
আছাদের বোন আম্বিয়া জানান, তার ভাই বিষপান করেনি। আগে থেকেই তার হার্টের সমস্যা ছিল। স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা কাটা-ছেঁড়া না করার জন্য পুলিশের হাতে-পায়ে ধরেছি। পুলিশ তাও শোনেননি। রোববার দুপুর একটা পর্যন্ত মরদেহ থানায় রয়েছে।
এদিকে প্রতিবেশীরা বলছে ভিন্ন কথা। তাদের ভাষ্য, আছাদ স্থানীয় ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। এবারের এক সাবজেক্ট এর এসএসসি পরীক্ষার্থী আছাদ মাতুব্বর গত ১১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) দ্বীতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সালথার বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিষ্ণুদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতীক নুরুল ইসলামের এজেন্ট ছিলো।
নৌকা প্রতীকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন আনারস মার্কার খন্দকার শাহিন। নির্বাচনে ২২ ভোটে হেরে যান নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম। পরের দিন শুক্রবার বিজয়ী আনারস প্রতীকের সমর্থকরা আনন্দ উল্লাস করছিলেন বিষ্ণুদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। আছাদের বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় সে ওই উল্লাসে বাধা দেয়। এ নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি ও তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বিজয়ী আনারস প্রতীকের সমর্থকরা। পরে রাগে ক্ষোভে শনিবার সকালে আছাদ বিষ পান করে। সকালে ধান ক্ষেতে যায় ধান আনতে। ধানের বোঝা মাথায় করে বাড়ির ওঠানে আনার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরিদপুরে রেফার করেন। ফরিদপুরে নেওয়ার পথে শসা গ্রামের ব্রিজের কাছে গেলে তার মৃত্যু হয়। আছাদের এই মৃত্যু নিয়ে নানান কথার কারণে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে জানতে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসিকুজ্জামানের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ফরিদপুর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, আমি এরকম ঘটনা শুনেছি। তবে আমি কনস্টেবল নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জেলার বাইরে দায়িত্বে রয়েছি। এ কারণে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।