নিউজ ডেস্ক :: চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধিসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ৮ হাজার ৭৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৬টি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ৯২৯ কোটি ০৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক অর্থায়ন ২ হাজার ৮১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী এবং একনেকের চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার গণভবনের সাথে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেন। একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাই মাসে একনেকে অনুমোদন পেলেও কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। তাই প্রকল্পটির কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়াতে হয়। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের আপত্তি, জমি অধিগ্রহণে অপেক্ষা, ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়া, লালখান বাজার অংশের নকশা সংক্রান্ত আপত্তি ও বিকল্প সড়ক চালুতে সময়ক্ষেপণসহ নানা কারণে প্রকল্পটি দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে।
প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৪৮ কোটি ১১ লাখ ১৭ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ ১১ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি মোট ২ হাজার ৩১২ কোটি ২২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা (৭১ দশমিক ১৩ শতাংশ) এবং বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ।
জানা যায়, বর্তমানে অনুমোদিত প্রকল্পের ফ্লাইওভারের অ্যালাইনমেন্টে সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। ভূমি সমতলে রাস্তার প্রশস্ততা বজায় রাখতে পিয়ারের পরিসর কমিয়ে ফ্লাইওভারের নকশা সংশোধন করা হয়েছে। কংক্রিটের গ্রেড উন্নয়ন ও অতিরিক্ত নির্মাণকাজের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি, কিছু অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধি এবং বাস্তবায়ন মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটি প্রথম সংশোধন করা হয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দু’টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘কুমিল্লা (ময়নামতি-ব্রাহ্মণবাড়িয়া (ধরখার) জাতীয় মহাসড়ককে (এন-১০২) চারলেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প এবং ‘বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়কের (এন-৮০৯) বরিশাল (চারকাউয়া) হতে ভোলা (ইলশা ফেরীঘাট) হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ্ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ‘ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড এ্যালায়েড সায়েন্সেস (ইনমাস) মিটফোর্ড, কুমিল্লা, ফরিদপুর, বরিশাল ও বগুড়া-এর সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হাসকরণ’ প্রকল্প এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ) (৪র্থ সংশোধিত)’ প্রকল্প।
একনেক সভায় পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষি মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহ্মুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন; ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী; এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।