শিরোনাম :
শাবিতে নতুন ভিসি, প্রো-ভিসি ও কোষাধ‍্যক্ষ সিলেট কয়লা আমদানীকারক গ্রুপ ও তামাবিল পাথর আমদানীকারক গ্রুপের মতবিনিময় সভা সুনামগঞ্জের শ্যামারচরে জামায়াতের সীরাতুন্নবী (সাঃ) মাহফিল মধুপূর্ণিমা তিথিতে চারুআড্ডা’র আহ্বানে আলোকিত বিশ্ব গড়তে আলো হাতে দশ মিনিট সানাবিল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গোলাপগঞ্জে শহীদ পরিবারের মধ্যে নগদ অর্থ প্রদান সিলেটের গোলাপগঞ্জে অস্ত্রসহ যুবক গ্রেপ্তার এম ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবকদলের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা কিডনি বিশেষজ্ঞ দলের সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল পরিদর্শন সিলেটে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীর মুখে ‘মুহাম্মদের গান’ জাফলংয়ে লুৎফুর উদ্দিন মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান

বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের সরাতে আইনি নোটিশ

রিপোর্টার নামঃ
  • মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৭০ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে সরাতে এবং সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ান রাষ্ট্রগুলোতে শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে স্থানান্তরের দাবিতে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান।

উক্ত আইনি নোটিশে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এবং শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কে বিবাদী করা হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তার ভুখন্ডে ১২ লাখ মায়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা সন্তান গ্রহণ করছে । এই রোহিঙ্গাদের প্রতিপালন করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বছর ১২০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হচ্ছে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা ।

নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি অনুসরণ না করে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এই ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বাংলাদেশের জনগনের কষ্টার্জিত অর্থ রোহিঙ্গাদের জন্য খরচ করা হচ্ছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি অনুযায়ী তিনটি শর্তের যে কোন একটি পূরণ করলে কোন নির্যাতিত জনগোষ্ঠীকে অন্য রাষ্ট্র আশ্রয় দিতে পারে। প্রথমত, যদি আশ্রয় দানকারী রাষ্ট্র ১৯৫১ সালের শরণার্থী বিষয়ক কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রটোকলের স্বাক্ষরিত রাষ্ট্র হয় সেই ক্ষেত্রে সেই রাষ্ট্র শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে আইনগতভাবে বাধ্য । দ্বিতীয়ত, কোন নির্যাতিত জনগোষ্ঠী যখন স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হয় সেক্ষেত্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহ সেই জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারে । তৃতীয়ত, যদি একাধিক রাষ্ট্র সম্মিলিতভাবে শরণার্থী গ্রহণ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় ।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দানের ক্ষেত্রে উল্লেখিত আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি মানা হয়নি । প্রথমত, বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থী বিষয়ক কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রটোকলের স্বাক্ষরিত রাষ্ট্র নয় । তাই বাংলাদেশ আইনগতভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য নয় । দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠী নয়। তারা স্বাধীনতার জন্য কোন সংগ্রামে লিপ্ত নয়। তাদের কোন প্রবাসী সরকার নেই। যার দরুন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অন্যকোন রাষ্ট্রের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের অধিকারী নয়। তৃতীয়ত, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দানের জন্য বাংলাদেশের সাথে আঞ্চলিক কোন সংস্থা যেমন সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ানের কোনোরূপ চুক্তি নেই । যার দরুন এককভাবে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না ।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ কোনভাবেই এককভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না । এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সংস্থা গুলোকে এই রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে হবে । এক্ষেত্রে যে রাষ্ট্রগুলো আয়তনে বড় তাদেরকে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিতে হবে । এটাই আন্তর্জাতিক রীতি । উদাহরণ স্বরূপ, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় লাখ লাখ সিরিয়ার শরণার্থী ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রসমূহে প্রবেশ করে । তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সদস্য রাষ্ট্র সমূহ কে শরণার্থী গ্রহণের জন্য কোটা নির্ধারণ করে দেয় । বর্তমানে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধে, ইউক্রেনের শরণার্থীরা ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এক্ষেত্রে একক কোন দেশ এসব শরণার্থীদের বোঝা নেয়নি বরং সম্মিলিতভাবে ভাবে নিয়েছে ।

বাংলাদেশ সার্ক ও বিমসটেকের সদস্য। অপরদিকে মায়ানমার বিমসটেক ও আসিয়ানের সদস্য। বর্তমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে এইসব আঞ্চলিক সংগঠন সার্ক, বিমসটেক ও আসিয়ানকে দায়িত্ব নিতে হবে। এসব সংগঠনের বড় রাষ্ট্রগুলোকে অধিক সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিতে হবে । আয়তনে দিক দিয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত ছোট একটি রাষ্ট্র যার আয়তন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিমি। অপরদিকে সার্কের বড় আয়তনের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভারতের আয়তন ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬৯ বর্গ কিলোমিটার, পাকিস্তানের আয়তন ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯৬ বর্গ কিলোমিটার, আফগানিস্তানের আয়তন ৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৬৪ বর্গ কিলোমিটার। অন্যদিকে আসিয়ানের অন্তর্গত বড় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার আয়তন ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৯০৭ বর্গ কিলোমিটার, মালয়েশিয়ার আয়তন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৪১১ বর্গ কিমি, থাইল্যান্ডের আয়তন ৫ লাখ ১৩ হাজার ১২০ বর্গ কিমি, ভিয়েতনামের আয়তন ৩ লাখ ৩১ হাজার ২৩৬ বর্গ কিলোমিটার।

নোটিশে বলা হয়, এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ সরকার কে অবশ্যই আন্তর্জাতিক রীতি অনুসরণ করে অবিলম্বে এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সার্ক, বিমসটেক ও আসিয়ান রাষ্ট্র সমূহ স্থানান্তর করতে হবে। এক্ষেত্রে আয়তনে বড় রাষ্ট্রসমূহে অধিক সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিতে হবে। সর্বোপরি শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে এই রাষ্ট্রগুলো কে এই রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে হবে । শুধুমাত্র বাংলাদেশের উপর এই রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব চাপানো যাবে না।

উক্ত আইনি নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এই রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করে সার্ক, বিমসটেক ও আসিয়ান রাষ্ট্রসমূহে শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে অন্যথায় এই বিষয়ে ব্যাবস্থা নিতে মহামান্য হাইকোর্টে রিট দায়ের হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain