শিরোনাম :
সিলেটে নারীর কাছে মিললো বিদেশি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ টাকা বৃহত্তর জৈন্তিয়া কল্যাণ পরিষদের আহবায়ক কমিটির সভা সিলেট মহানগর শ্রমিক কল্যাণের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলণের প্রস্তুতি সভা সিলেটে জমিয়তের গণসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে মহানগর জমিয়তের প্রচার মিছিল সিলেট সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ১কোটি ২১ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ সেনাবাহিনী যেতেই পালালেন রিকশাচালকরা, ধাওয়া দিলেন পথচারীরাও গ্রেপ্তার শাহজাহান ওমর-‘‌আমার নামে মামলা আছে, জানতাম না’ হবিগঞ্জে আ.লীগ নেতা সাইফুলসহ গ্রেফতার-২ আনোয়ার ফাউন্ডেশন ইউকের পক্ষ থেকে বিপিজেএ সিলেটকে সাউন্ড সিস্টেম প্রদান সিএনজির চালক সুজিত হ ত্যা মামলার ৩ আসামী গ্রেফতার

দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্টার নামঃ
  • রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: আওয়ামী লীগের কোনো এমপি বা দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কেউ বিষোদগার করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সামনে নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা বিএনপির বিরুদ্ধে কথা না বলে প্রতিযোগিতার অংশ হিসাবে দলীয় এমপি বা নেতাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে আমার কাছে জরিপের ফলাফল আছে। জরিপের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে। কারো বিরুদ্ধে কথা বলে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রতিযোগিতায় কেউ নামবেন না। আমাদের এখন একটাই কাজ সামনে নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন হবে। এই কঠিন সময়ে কেউ দলীয় বিরোধে জড়াবেন না।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক প্রায় পাঁচ ঘন্টা ব্যাপী হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা।

বৈঠক সূত্রে জানায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে ঢাকায়, সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা ও কুমিল্লায় সমাবেশ করবে দলটি। এ সমাবেশ জনসমুদ্রের রূপ নেবে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হবে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের জনগণ রয়েছে। এছাড়া আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান একটি সমাবেশে রূপ নেবে। তবে বাকি সমাবেশের দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। এছাড়াও সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলায়ও সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এই প্রত্যেকটি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী সূচনা বক্তব্য দেন। পরে ৮ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা তার নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আহমদ হোসেন বক্তব্য দেন।

এরপর আহমদ হোসেনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলী সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা বলেন, সিলেটে বিভাগের অনেক ত্যাগী নেতাকেই পদ-পদবি দেওয়া হয়নি। যারা দীর্ঘদিন দলের দুঃসময়ে কাজ করেছেন। জেল খেটেছেন। বিএনপির জামাতের শাসনামলে হামলা মামলার শিকার হয়েছেন তাদের অনেককেই দলে স্থান দেওয়া হয়নি। এ সময় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যারা দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। ত্যাগী তাদেরকে দলে রাখতে হবে। কেউ যদি তাদেরকে দলে রাখতে না চান তাহলে সেটিও আমাকে জানাতে হবে। এ সময় শেখ হাসিনা তৃণমূল পর্যায়ে যেসব দ্বন্দ্ব ও বিরোধ রয়েছে তা মিটিয়ে ফেলার তাগিদ দেন। যদি কেউ দ্বন্দ্ব ও বিরোধ মেটাতে ব্যর্থ হন, সেটি আমাকে জানাবেন। কেউ যদি তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের দলে সুযোগ না দেন এমন তথ্য আমি পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা বিএনপির শাসনামলে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদেরকে দলে রাখতে হবে। তাদের পদ পদবি দিতে হবে। যারা হাইব্রিড তাদেরকে দলের কোন পদ পদবী দেওয়ার দরকার নেই। দলের দুর্নাম হাইব্রিড নেতারা করে। তাদের দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা যাবে না।

এ সময় দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচনে কারো চেহারা দেখে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। যারা বিভিন্ন সময় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের মূল্যায়ন করেছেন। সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতি জনগণের কাছে তুলে ধরেছেন। যারা বিএনপির অপরাজনীতি সম্পর্কে মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। যারা জনগণের দৌড়গোড়ায় পৌঁছেছেন, তাদেরকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। সবার জরিপের ফলাফল আমার কাছে আছে। এবার আমি কারো কোনো সুপারিশ মানবো না। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে দলীয় মনোনয়ন হবে। আমি যাকে মনোনয়ন দেব তার পক্ষেই সবাইকে কাজ করতে হবে। এর বিরুদ্ধে যারা যাবে তাদেরকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা মাথা পেতে নিতে হবে। আমি অনেককেই দেখেছি দলীয় শৃঙ্খলা তারা মানেন না। আমরা পরবর্তীকালে তাদেরকে ক্ষমাও করেছি। কিন্তু এবার আর কোনো ক্ষমা করা হবে না।

বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে নির্বাচন পর্যন্ত প্রত্যেক নেতাকর্মীকে মাঠে থাকতে হবে। কারণ বিএনপি-জামায়াত আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমাদের জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছতে হবে। গত সাড়ে চোদ্দ বছরের সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতি জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। বিএনপি জামাতের অত্যাচার নির্যাতন মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। জিয়াউর রহমান কিভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, সেটি জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। বিএনপি জামাতের দু:শাসন জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারলে এবং আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদেরকে কেউ হারাতে পারবে না। আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে। তবে এবারের নির্বাচন একটু কঠিন হবে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

এদিকে, গত ৬ আগস্ট জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ভারপ্রাপ্তমুক্ত করা হয়। যাদেরকে ভারমুক্ত করা হয়েছে তাদের বিষয়টি দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়।

তাদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, যারা ভারমুক্ত হয়েছেন। তারা যাতে নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করেন সেটি সাংগঠনিক সম্পাদকরা তদারকি করবেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় বাইরে থেকে অনেক যোগ্য লোককে দলীয় মনোনয়ন দেই। সেটা বিভিন্ন কারণে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হলে। দেশের গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে হলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাদেরকে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে রাখতে হবে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কমিটি দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে আমি কিন্তু কাউকে ছাড়বো না। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ না থাকলে আগামী নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হতে পারব না। আর আমরা বিজয়ী না হলে কেউ কিন্তু ঘরে ঘুমাতে পারবেন না। এই বিষয়গুলো আপনাদের মাথায় রাখা উচিত। আমি বলব, নির্বাচনকে সামনে রেখে যার যার এলাকায় আপনারা যান। মানুষের জন্য কাজ করুন। নির্বাচনী প্রচারণা চালান। বিএনপি নির্বাচনে আসুক বা না আসুক। নির্বাচন যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী হবে। তবে আমরা আশা করি বিএনপির শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে। তারা এখন যে আন্দোলন সংগ্রাম করছে। তাদের আন্দোলন করতে দেন। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছে এটি আর বাংলাদেশে কোনদিন হবে না। আমরাও নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবো। আমাদের যে মাঠে শক্তিশালী অবস্থান আছে সেটিও প্রমাণ করতে হবে। যাতে জনগণ বোঝে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের মানুষ আছে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain