নিউজ ডেস্ক :: প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘দুর্নীতি কেবল সেবার বিনিময়ে ঘুষ নেওয়া এবং অর্থ আত্মসাতই নয়, রাষ্ট্রের একজন কর্মচারী হিসেবে হোক কিংবা দেশের একজন নাগরিক হিসেবেই হোক, নিজেদের ওপর দায়িত্ব যদি যথাযথভাবে পালন না করি, সেটাও এক প্রকারের দুর্নীতি।’
আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘সংবিধান ও আইন মান্য করা এবং শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সক্রিয় অংশগ্রহণ নাগরিক দায়িত্বরই অংশ।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবন্ধ হই, দেশ থেকে দুর্নীতি সমূলে উৎপাটনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করি।’
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির বিকাশের কারণে দুর্নীতির ধরণও পাল্টেছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বর্তমান বাস্তবতায় দুদকের সামনে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ বিদ্ধমান। এ কারণে দুদকে দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় মামরা-মোকাদ্দমায় নয়, বরং অনুসন্ধান, তদন্ত এবং মামলা পরিচালনায় আধুনিকীকরণ, রেকর্ড ব্যবস্থাপনায় যুগোপযোগীকরণ, দুর্নীতি প্রতিরোধে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনীকরণ এবং কর্মকৌশল প্রণয়ন বাস্তবায়ন করতে হবে।’
দুদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিটের মাধ্যমে আদালতে মামলা পরিচালনার বিধান রয়েছে। তাই কমিশনের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারা যতদ্রুত সম্ভব নিজস্ব প্রসিকিউশন ইউনিট গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করুন। তাহলে দেশের আদালতসমূহে দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো আরও দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। একই সাথে কমিশনের অনুসন্ধান, তদন্তের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারা সর্বোচ্চ সততার সাথে আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জ্ঞাতভিত্তিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশি গুরুত্ব দিতেন। এত বছর পরও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আজ আমাদের কাছে খুবই প্রাসঙ্গিক।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক, দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন ও দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।