অনুসন্ধান নিউজ ::সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ফিলিং স্টেশন। যেগুলোতে কিছুটা গ্যাস রয়েছে, সেখানে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। নগরজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সিএনজি ফিলিং স্টেশন মালিক-চালক ও যাত্রীরা। সবিশেষ করে, প্রতি মাসের শেষদিকে সিলেটে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সংকট তীব্র হয়। এই অবস্থা চলছে প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েও গ্যাস পান না পরিবহন চালকরা। লোড না বাড়ানোর কারণে মাসের শেষ ১০ দিন চাহিদামতো গ্যাস সরবরাহ করতে পারেন না বলে জানান সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকরা।
এ নিয়ে তারা বারবার গ্যাস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিক আবেদন জানালেও কোনো কাজ হয়নি; বরং দিনকে দিন সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকরা কঠোর আন্দোলনের চিন্তা-ভাবনা করছেন।
মালিকরা জানান, ২০০৭ সাল থেকে সিলেটে সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে পরিবহনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে সিলেট বিভাগে রয়েছে ৫৬টি ফিলিং স্টেশন। গত এক দশক ধরে নতুন কোনো পাম্পের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না।
অন্যদিকে ২০০৭ সালের তুলনায় বর্তমানে সড়কে গাড়ি বেড়েছে চারগুণ। অথচ ২০০৭ সালের দেওয়া লোড দিয়েই গ্যাস সরবরাহ করতে হচ্ছে। এ কারণে ফিলিং স্টেশনের মালিকরা প্রতি মাসের শেষ ১০ দিন গ্যাস সংকটে পড়েন।
মালিকরা আরও জানান, বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ প্রতি ফিলিং স্টেশনের মালিকদের জন্য লোড নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর বাইরে যেসব পাম্প গ্যাস বিক্রি করেন তাদের জরিমানার মুখে পড়তে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর বিভিন্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দীর্ঘ গাড়ির লাইন। সোমবার নগরীর ইউসুফ আলী সিএনজি ফিলিং স্টেশন, আর রহমান ফিলিং স্টেশন, আল জালালা ফিলিং স্টেশন, কুশিয়ারা ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকার কারণে গ্যাসে তীব্র সংকট দেখা দেয়।
যে কয়েকটা সিএনজি ফিলিং স্টেশন খোলা রয়েছে সেখানে দেখা গেছে প্রায় ১ কিলোমিটার জুড়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন হওয়ায় নগর জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
রবিবার বন্ধ ছিল সিলেট নগরীর আম্বরখানা জালালাবাদ সিএনজি ফিলিং স্টেশন, টুকেরবাজার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিলিং স্টেশন, আখালালি শাহজালাল ফিলিং স্টেশন, তেমুখী সফাতউল্লাহ ফিলিং স্টেশন।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিমাসের শেষ দিকে এসে সিলেটে গ্যাসে সংকট হয়। গাড়ির চালকসহ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
তারা বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে গ্যাস নিতে হয়। রোজগারের সময় চলে যায়, আমাদের মালিকের জমা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের পরিবার চালাতে খুব কষ্ট হয়। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের দাবি সিলেটে যেন গ্যাস সংকটের সমাধান করেন।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিভাগীয় সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, গ্যাস বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য জালালাবাদ গ্যাসের কাছে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। বৈঠকও করা হয়েছে। জাতীয় সংকটের দোহাই দিয়ে তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ গ্যাস সিলেট থেকে গ্রিডে সংযোজন হচ্ছে। কিন্তু সিলেটে গ্যাস সংকটে সিএনজি পাম্পগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক।
পাম্পগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।