শিরোনাম :
সিলেটে নারীর কাছে মিললো বিদেশি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ টাকা বৃহত্তর জৈন্তিয়া কল্যাণ পরিষদের আহবায়ক কমিটির সভা সিলেট মহানগর শ্রমিক কল্যাণের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলণের প্রস্তুতি সভা সিলেটে জমিয়তের গণসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে মহানগর জমিয়তের প্রচার মিছিল সিলেট সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ১কোটি ২১ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ সেনাবাহিনী যেতেই পালালেন রিকশাচালকরা, ধাওয়া দিলেন পথচারীরাও গ্রেপ্তার শাহজাহান ওমর-‘‌আমার নামে মামলা আছে, জানতাম না’ হবিগঞ্জে আ.লীগ নেতা সাইফুলসহ গ্রেফতার-২ আনোয়ার ফাউন্ডেশন ইউকের পক্ষ থেকে বিপিজেএ সিলেটকে সাউন্ড সিস্টেম প্রদান সিএনজির চালক সুজিত হ ত্যা মামলার ৩ আসামী গ্রেফতার

লিবিয়ায় দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রাণ গেল জগন্নাথপুরের যুবকের

রিপোর্টার নামঃ
  • শনিবার, ১ জুলাই, ২০২৩
  • ২০৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের যুবক সাহেদ আলীর মরদেহ চার মাস পর গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছেছে।

পবিত্র ঈদুল আজহার আগের রাত বুধবার সাড়ে ১২ টায় তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের বনগাঁওয়ে এসে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়, পরিবারের সদস্যদের বুকফাটা কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ।

খবর পেয়ে গ্রামের শতাধিক লোক জড়ো হন নির্যাতনে মৃত্যুবরণকারী সাহেদ আলীকে শেষ দেখা দেখতে। এরপর রাতেই জানাজা শেষে গ্রামের পঞ্চায়েত কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের পাড়ারগাঁও গ্রামের দালাল শাহীনের মাধ্যমে বনগাঁও গ্রামের কৃষক মৃত তবারক আলী ও গৃহিণী হাজেরা বিবি দম্পতির ছোট ছেলে সাহেদ আলী ২০২২ সালের ২১ মে চার লাখ টাকা দিয়ে লিবিয়া যায়। সেখানে পরিচয় হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দালাল সাদ্দাম ও সাইফুলের সঙ্গে। গত বছরের নভেম্বর মাসে সাদ্দাম ও সাইফুল তাকে মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেয়। তখন ওই চক্র তার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ২৫ ফেব্রুয়ারি মাফিয়া চক্রের এক সদস্য ফোন করে পরিবারের নিকট সাহেদ আলীর মৃত্যুর খবর জানায়।

সাহেদ আলীর বোন সেবিকা বেগম জানান, মুক্তিপণের টাকার জন্য আমার ভাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। দিনের পর দিন অনাহারে রাখা হয়। আমরা দালাল সাদ্দামের মাধ্যমে মাফিয়া চক্রের সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করে প্রাণভিক্ষা চেয়েও ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে পারিনি। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় লিবিয়ার ত্রিপলিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করে ভাইয়ের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনি। চার মাস পর বুধবার আমি ঢাকায় লাশ গ্রহণ করি। এবং বাড়িতে নিয়ে এসে সবাইকে নিয়ে দাফন কাজ সম্পন্ন করি।

সাহেদ আলীর ভাই সৈয়দ আলী জানান, দালাল সাদ্দাম দেশে ব্যাংকে তাদের স্বজনদের মাধ্যমে টাকা নিয়েছে। টাকা নিয়েও আমার ভাইকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই।

সাহেদ আলীর মা হাজেরা বিবি লাশ বাড়িতে আসার পর বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন, আর কেঁদে-কেঁদে বলছিলেন ‘আমার ছেলের মৃত্যু দেখার আগে কেন আমি মরলাম না’ আমার বুক যারা খালি করছে তাদের বিচার চাই।

বনগাঁও গ্রামের বাসিন্দা তরুণ সমাজকর্মী ইমাদ উদ্দিন আকাশ জানান, পরিবারের ভাগ্য ফেরাতে শেষ সম্বল জায়গা জমি বিক্রি করে লিবিয়া হয়ে ইতালি যেতে চেয়েছিল সাহেদ আলী। দুভাগ্যজনক মর্মান্তিক মৃত্যুতে দরিদ্র পরিবারটি নিঃশেষ হয়ে গেছে। আমরা দেড়লাখ টাকা চাঁদা তুলে মাফিয়া চক্রের কাছে পাঠিয়ে ছেলেটিকে বাঁচাতে পারলাম না। এমন পরিণতি যেন আর কারো না নয় রাষ্ট্রের কাছে এটা আমাদের চাওয়া।

জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার পর থেকে সার্বক্ষণিক পরিবারটির পাশে থেকে সান্ত্বনা ও সহায়তার চেষ্টা করছি। পরিবারের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা চাওয়া হলে আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ নেব।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain