শিরোনাম :
বিজিবির অভিযানে ১ কোটি ৭৪ লক্ষাধিক টাকার চোরাচালান জব্দ ঈদ উপলক্ষে সিলেট বাস টার্মিনাল এলাকায় বিআরটি কর্তৃক অভিযান ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা সিলেটে ছাত্রলীগ নেতা শাফায়াতসহ ৮ জন গ্রেফতার ঈদের পরদিন থেকে কক্সবাজারে ঢল নেমেছে পর্যটকের মাইকে ঘোষণা দিয়ে টর্চলাইট জ্বালিয়ে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ চট্টগ্রামের সেই এলাকায় আবারও দুর্ঘটনা, নিহত ১০ ঈদের ছুটিতে জাফলংয়ে আগত পর্যটকদের সেবায় ছাত্রদল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: খালেদা জিয়া গোয়াইনঘাটে ঈদের দিনে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ আহত ২৫ এলাকায় পুলিশ মোতায়ন জাফলং পানিতে ডুবে ঈদের ১ম দিনেই প্রাণ গেল পর্যটকের

কমলগঞ্জে পানিবন্দী লাখো মানুষ, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট

রিপোর্টার নামঃ
  • বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৩৩ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান নিউজ :: গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর ছয়টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনদিনেও বন্যার তেমন উন্নতি হয়নি। গত বুধবার রাতে নতুন করে ধলাই নদীতে ভাঙ্গন দেখা দেয়। উজানে কিছুটা পানি নামলেও নিম্নাঞ্চলে অবনতি দেখা দিচ্ছে। পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নের পানিবন্দী লাখো মানুষের খাদ্য সংকট ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

তবে সরকারি উদ্যোগে ও বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ শুরু হলেও পর্যাপ্ত নয় বলে অনেকে দাবি করছেন। পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে, অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। গ্রামীণ সড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন।

কৃষকরা জানান, ভয়াবহ বন্যায় আধাপাকা আউশ ধান, আমন ক্ষেত, ধানের চারা, মাছের খামার, মোরগের খামার, গো-খাদ্য, পুকুরের মাছ ও সবজিক্ষেত সহ বিস্তীর্ণ এলাকা তিন থেকে চার ফুট পরিমাণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

বুধবার বিকালে উজানের আদমপুর, ইসলামপুর ইউনিনে পানি কিছুটা কমতে থাকলেও সন্ধ্যায় উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ধলাই নদী বিপদসীমা অতিক্রম করে। আবারো বন্যার পানি নামতে শুরু করে। এতে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে থাকে। বন্যায় নিম্নাঞ্চলের আলীনগর, শমশেরনগর, পতনঊষার ও মুন্সিবাজার ইউনিয়নে একরকম জলাবদ্ধতা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হচ্ছে।
পতনঊষারের বন্যার্ত শেরওয়ান আলী, আক্তার মিয়া বলেন, বন্যার কারণে বসতঘরে পানি আসায় বিশেষত গবাদি পশু ও হাঁসমুরগী নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। ইসলামপুরের স্কুল শিক্ষিকা অনামিকা সিনহা বলেন, নদীভাঙ্গনের ফলে ঘরের মধ্যে প্রায় হাঁটু পানির মতো প্রবল স্রোত দেখা দেয়। এতে ঘরের জিনিসপত্র অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দু’দফায় এভাবে বন্যায় কষ্টের সীমা ছাড়িয়ে যায়।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে কমলগঞ্জের ৪টি ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। বুধবার সন্ধ্যায় রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেগ এলাকায় ধলাই নদীতে নতুন করে ভাঙন সৃষ্টি হয়।

কমলগঞ্জের ৯টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম বন্যা আক্রান্ত। শতাধিক পুকুরে মাছ ভেসে গেছে। ৬ হাজার হেক্টর আমন ও ২০০০ হেক্টর আউস ধান নিমজ্জিত। ৩৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি থাকায় শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ৩টি হাইস্কুলও বন্যা কবলিত।

তবে জানা গেছে, ইসলামপুর ইউনিয়নের উত্তর গোলের হাওর, কানাইদাসি, বনগাঁও, কোনাগাঁও, চা¥্পরায় চা বাগানসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় অর্ধ শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকই অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তালুকদার জানান, বন্যায় উপজেলায় প্রায় ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ঢ এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত। এসব বিদ্যালয়েঢ শ্র্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্কা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, এখন পর্যন্ত ৮ হাজার হেক্টর আউস ও আমন ধান নিমজ্জিত রয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীন বলেন, সরকারিভাবে বন্যার্তদের মধ্য ত্রাণের জন্য বরাদ্ধ এসেছে। ইতিমধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন. বন্যার তেমন কোন উন্নতি হচ্ছে না। একদিকে পানি কমলেও নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য সরকারিভাবে ৬০ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবারের জন্য সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বন্যার্তদের সার্বক্ষনিক নজরদারি করা হচ্ছে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain