অনুসন্ধান ডেস্ক :: দূর্গেশ সরকার বাপ্পী গোয়াইনঘাট :: ‘কাজ চাই, ভাত চাই, পাথর কোয়ারি সচল চাই’, ‘পাথর কোয়ারি বন্ধ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমাদের দাবি একটাই পাথর কোয়ারি খুলে দাও, দিতে হবে, দিতে হবে এমন সব স্লোগানকে সামনে রেখে জাফলংসহ বৃহত্তর সিলেটের সকল পাথর কোয়ারি পরিবেশসম্মত ও সনাতন পদ্ধতিতে সচল করার দাবিতে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার মধ্য জাফলংয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সেমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে মধ্য জাফলং বার্কী শ্রমিক সমবায় সমিতি ও মধ্য জাফলং বাসীর আয়োজনে রাধানগর বাজারে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সংবলিত ফেস্টুন, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে লোকজন জড়ো হন।
পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষের আমল থেকে পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন করা হলেও দুর্ভাগ্যবশত আজ এত বছর পরেও আমাদের ভাত-কাপড়ের জন্য আন্দোলন করতে হয়।
পাথর কোয়ারি কখনও বন্ধ করতে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, লোভা, উৎমা ও শ্রীপুর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন, সংগ্রহ ও সরবরাহ করে অত্রাঞ্চলসহ দেশের প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এই পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন। কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ আজ পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করে আজ দেউলিয়া। পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর যে মারাত্মক দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা অবর্ণনীয়। একটি বৃহৎ অঞ্চলের ১০ লক্ষাধিক মানুষের প্রাচীন এ জীবিকা বন্ধ হওয়ায় এর অর্থনৈতিক ক্ষতি হাজার হাজার কোটি টাকা। পাথর পরিবহনে সম্পৃক্ত হাজার হাজার ট্রাক ও ট্রাক্টর মালিক, শ্রমিকরা রোজগার বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
যুগ ধরে পাথর আহরণের মাধ্যমে কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের পথ পাথর কোয়ারিগুলো সনাতন পদ্ধতিতে সচল করে দেওয়ার জোর দাবি জানান তারা। অন্যথায় ন্যায্য এ দাবি আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে সিলেটে অবরোধ-ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
স্থানীয় প্রবীণ মুরুব্বী জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম আরিফের পরিচালনায় মানববন্ধন ও সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মধ্য জাফলং বার্কী শ্রমিক সমবায় সমিতির সভাপতি লোকমান হোসেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন মধ্য জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি সিরাজ উদ্দিন, রাধানগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ, জাফলং বল্লাঘাট পাথর উত্তোলন ও সরবরাহকারী শ্রমিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান মোল্যা, মধ্য জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল হাসান, মধ্য জাফলং বার্কী শ্রমিক সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি ইব্রাহিম খলিল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান প্রমুখ।